গণতন্ত্র কীভাবে ফিরিয়ে দেবেন, কাউন্সিলে সে ঘোষণা দিন
তরুণ কণ্ঠ ডেস্ক,
প্রকাশিত : ০৬:০০ পিএম, ২০ ডিসেম্বর ২০১৯ শুক্রবার

নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ছবি : এনটিভি
কীভাবে দেশের মানুষকে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেবেন, কাউন্সিল থেকে সে ঘোষণা দিতে আওয়ামী লীগের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
আজ শুক্রবার রাজধানীর ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম আয়োজিত আলোচনায় এসব কথা বলেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
আমীর খসরু বলেন, ‘বাংলাদেশের সব মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়ে আপনার দলের কাউন্সিল করছেন। আমি আশা করি, আজকের কাউন্সিলে তারা গণতন্ত্রে কীভাবে ফিরে যাবে, বাংলাদেশের মানুষের মৌলিক অধিকার যারা কেড়ে নিয়েছে, এগুলো কীভাবে ফিরিয়ে দেবে, তারা এই কাউন্সিলে ঘোষণা দেবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
তিনি বলেন, ‘ক্ষমতায় টিকে থাকতে সরকার রাজাকারের তালিকাসহ যত তালিকার প্রয়োজন হবে, সবই করবে।’ কিন্তু প্রকৃত শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করতে তাদের এত অনীহা কেন, তা জানতে চান এ বিএনপি নেতা। তিনি বলেন, ‘যারা বাংলাদেশের জন্য শহীদ হয়েছেন, তাঁদের তালিকা প্রস্তুত করার পেছনে তাদের এত ইতস্ততার কারণ কী।’
আমীর খসরু বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের মূল কারণ ছিল গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা। গণতন্ত্রের বাহক হচ্ছে নির্বাচন। যে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ যে দলটিকে নির্বাচিত করে, তারা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেয়। পাকিস্তান আমলে যেটা হয়েছিল; শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচিত হয়েছিল; কিন্তু পাকিস্তানিরা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেনি। তারা নির্বাচনের যে বাহক, তাকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। তার প্রতিবাদে বাংলাদেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে নেমেছিল। সেদিন ক্ষমতা হস্তান্তর না করায় গণতান্ত্রিক আন্দোলন হিসেবে শুরু হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধ। গণতন্ত্রের মূল বিষয় হলো বাকস্বাধীনতা, ব্যক্তিস্বাধীনতা, আইনের শাসন, সামাজিক নিরাপত্তা, ন্যায়বিচার। কিন্তু বাংলাদেশে আজ এসব অনুপস্থিত। তাই আমাদের এসব অধিকার ফিরিয়ে আনতে একটি মুক্তিযুদ্ধ করতে হবে এবং সেই মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেবেন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া। যিনি জেলে বসে আছেন, জেলে বসেও তাদের (সরকারের) ভয় শেষ হচ্ছে না।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য প্রতিটা মানুষ যারা জীবন দিয়েছেন, আমরা প্রতিটি মানুষের নাম জানতে চাই। এই সম্পূর্ণ তালিকা দেশের মানুষ, এলাকার মানুষ জানতে চায়। বিএনপির পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, বিএনপি যেদিন ক্ষমতায় আসবে, সেদিন যারা এ দেশের জন্য জীবনের মূল্য ত্যাগ করে প্রাণ দিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছেন, তাদের তালিকা বিএনপি প্রণয়ন করবে। তাদের তালিকা প্রণয়ন করে প্রতিটি এলাকায় স্তম্ভের মধ্যে তাদের নাম লেখা হবে। কিন্তু সরকার এই কাজটি করতে কেন এত দ্বিধাগ্রস্ত, তা আমরা জানি না।’
তিনি বলেন, ‘যারা দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন, যারা দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন, তাদের তালিকা প্রকাশ করতে বলার কারণে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ জন্য আমরা তালিকা প্রকাশ করব, সরকার যদি না করে, বিএনপি সেটা করবে।’
আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, বিলকিস ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহসভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ফরিদ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।