দানবের মতো শাসন সব আশা-স্বপ্নকে ধ্বংস করে দিয়েছে
তরুণ কণ্ঠ ডেস্ক,
প্রকাশিত : ০৯:০৮ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৯ বৃহস্পতিবার

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘যে গণতন্ত্রের জন্য, যে অধিকারের জন্য, যে সাম্যের জন্য আমরা লড়েছিলাম সেই লড়াইকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। এখন এমন একটা শাসন দানবের মতো আমাদের ওপর চেপে বসেছে, যেটা আমাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্নকে ধ্বংস করে দিয়েছে। শাসনতন্ত্র, যেটাকে আমরা সংবিধান বলি; সেই সংবিধানকে তারা (সরকার) ধ্বংস করে দিয়েছে। যে অর্থনৈতিক সাম্যের জন্য লড়াই করেছিলাম সেটাকেও ধ্বংস করে দিয়েছে।’
আজ বৃহস্পতিবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খানের বাবা ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সাবেক খাদ্যমন্ত্রী আবদুল মোমেন খানের ৩৫তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
আবদুল মোমেন খান স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে নরসিংদী সিঅ্যান্ডবি রোডের বধূয়া কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।
খালেদা জিয়া মুক্ত না হলে গণতন্ত্র মুক্ত হবে না উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত না করলে গণতন্ত্র মুক্ত হবে না। কারণ গণতন্ত্র ও খালেদা জিয়া এ দুটি অঙ্গাঙ্গিভাবেভাবে জড়িত। বেগম জিয়া সেই ব্যক্তি, সেই নেত্রী, যে সারাটা জীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) গৃহবধূ ছিলেন। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সহধর্মিণী ছিলেন। জিয়াউর রহমান যখন নৃশংসভাবে শহীদ হলেন, যখন বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রের জন্য কাঁদছিল, সেই সময় খালেদা জিয়া ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছেন, রাজপথে নেমেছেন। সেই পতাকাকে ধরে মানুষদের সঙ্গে নিয়ে নয়টি বছর সংগ্রাম করেছেন। স্বৈরাচারকে পরাজিত করে এ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন।’
বিএনপিকে মুক্তিযুদ্ধের দল উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘এই যে আজকে এরা মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা বলে, সেই মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ই তো বানিয়েছেন খালেদা জিয়া। তাই মুক্তিযোদ্ধা সম্পর্কে আর বেশি কথা বলতে চাই না। কারণ তারা নিজেরাই রাজাকারকে মুক্তিযোদ্ধা আর মুক্তিযোদ্ধাকে রাজাকার বানাচ্ছে। আমরা মুক্তিযুদ্ধের দল। আমরা সব সময় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিলাম। মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনা, গণতন্ত্রের যে চেতন, সেই চেতনাকে নিয়েই আমরা লড়াই করছি। আজকে আমাদের সংগ্রাম সেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে প্রতিষ্ঠিত করার সংগ্রাম। অর্থাৎ গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করার সংগ্রাম। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে প্রতিষ্ঠিত করবার সংগ্রাম।’
বর্তমান সরকার অবৈধ উল্লেখ করে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘বিজয় অবশ্যই হবে, বাংলাদেশের মানুষ কখনো কোনো আন্দোলনে পরাজিত হয়নি। আজকে আমরা ন্যায়ের পথে আছি, সত্যের পক্ষে আছি, বিজয় অবশ্যম্ভাবী। আমরা খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে সক্ষম হব ইনশা আল্লাহ।’
মোমেন খান প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আবদুল মোমেন খান একজন পথিকৃত। তিনি শুধু নরসিংদীর জন্য কাজ করেননি। তিনি সারা দেশের জন্য কাজ করে গেছেন। আমাদের সবাইকে তাঁর পথ অনুসরণ করে এগিয়ে যেতে হবে।’
স্মরণসভায় বক্তব্য দেন জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কামরুজ্জামান রতন, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক লে. কর্নেল (অব.) জয়নাল আবেদিন, বিএনপির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আশরাফ উদ্দিন বকুল, কেন্দ্রীয় সাবেক ছাত্রনেতা ফেরদৌস আহমেদ খোকন, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেন মিন্টু, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি সুলতান উদ্দিন মোল্লা, সহসভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মনজুর এলাহী, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন ভূইয়া ইরান, জামাল আহমেদ চৌধুরী প্রমুখ।