শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫   পৌষ ৫ ১৪৩২   ২৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে জনপ্রিয় হচ্ছে বিমান, ফ্লাইট বাড়ানোর দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

কক্সবাজার সৈকত

প্রকাশিত : ১১:২১ এএম, ৬ নভেম্বর ২০১৮ মঙ্গলবার

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে বেশ ভালো যাত্রী সাড়া মিলছে। চলতি বছরের মার্চে যাত্রা শুরুর পর প্রথমদিকে যাত্রীদের আগ্রহ তেমন ছিল না। কিন্তু নিয়মিত ফ্লাইট চালু থাকায় ধীরে ধীরে যাত্রী চাহিদা বেড়ে যায়। এখন প্রতি সপ্তাহের তিনটি ফ্লাইটে ২৫০ যাত্রী আসা-যাওয়া করছে। প্রতিমাসে এই সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে তিন হাজার।


যাত্রী চাহিদা বাড়ায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এই রুট। এ অবস্থায় ফ্লাইট সংখ্যা বাড়িয়ে প্রতিদিন করার পরিকল্পনা করছে বিমান কর্তৃপক্ষ। জানতে চাইলে বিমান বাংলাদেশের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ বলেন, ‘প্রথমদিকে যাত্রী সাড়া কম থাকলেও এখন বিপুল জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই রুট। বিদেশি দাতা সংস্থা, উন্নয়ন প্রকল্পে নিয়োজিত দেশি-বিদেশি কর্মকর্তা এবং পর্যটকরা এই রুটে কক্সবাজার যাচ্ছেন।


তিনি বলেন, ‘যাত্রী চাহিদা বাড়ায় এখন চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে ফ্লাইট সংখ্যা তিনটি থেকে বাড়ানোর আবেদন করেছে কক্সবাজার বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। এই অবস্থায় আমরা ফ্লাইট বাড়ানোর পরিকল্পনা করছি।


এর আগে গত ২০১৭ সালের অক্টোবর মাস থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে সপ্তাহে মাত্র একদিন ফ্লাইট চালু করেছিল বাংলাদেশ বিমান। কিন্তু বিমানের ফ্লাইট শিডিউল ভুল ও যৌক্তিক না হওয়া এবং যথেষ্ট প্রচারণা না থাকায় এই রুটে ব্যাপক সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও যথেষ্ট যাত্রী সাড়া মেলেনি। পরে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে গত মার্চ থেকে নিয়মিত ফ্লাইট চালু করলে যাত্রী সাড়া বেড়ে যায়। যাত্রীরা বিমানকে বেছে নেয়ার কারণ হচ্ছে, এই রুটে বাংলাদেশ বিমান ছাড়া অন্য কোনো ফ্লাইট নেই। কক্সবাজার যেতে ঢাকা থেকে সবগুলো বিমান সংস্থার অনেক ফ্লাইট থাকলেও চট্টগ্রাম থেকে রয়েছে কেবল বাংলাদেশ বিমানের।


বিমান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখনকার সময়সূচিতে সপ্তাহের সোমবার, বৃহস্পতিবার ও শনিবার চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যাবে। সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে ৯ টা ২০ মিনিটে পৌঁছবে। আর পৌনে ৯টায় কক্সবাজার থেকে ছেড়ে ১০টা ২৫ মিনিটে চট্টগ্রাম পৌঁছবে। এখন চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যাওয়ার ভাড়া সর্বনিম্ন ২১০০ টাকা আর কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম আসার ভাড়া সর্বনিম্ন ২১০০ টাকা।


জানা গেছে, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার ঘিরে অনেক বড় উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে আওয়ামী লীগ সরকার। এসব প্রকল্পে বিপুল পরিমাণ বিদেশি প্রকৌশলী ও বিশেষজ্ঞ কাজ করছে। এছাড়া টেকনাফে রোহিঙ্গা কার্যক্রমকে ঘিরে এসেছে বিপুল বিদেশি এবং আসা যাওয়া বেড়েছে দেশিয় এনজিও কর্মীদের। দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তাদের কাছে ক্রমে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠলেও চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের মধ্যে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে দেড় থেকে দুই লেনের সড়ক পথ। ১৬০ কিলোমিটার এই দূরত্ব পাড়ি দিতে লাগছে কমপক্ষে ৫ ঘণ্টা। অথচ বিমানে ৩০ মিনিটেই এই দূরত্ব পাড়ি দেওয়া সম্ভব। ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠা দুটি এলাকার বিনিয়োগ, বাণিজ্য ও পর্যটন সম্ভাবনা কাজে লাগাতে বিমান যোগাযোগ বেশ সুফল দিচ্ছে।


জানা গেছে, স্বাধীনতার পর থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ বিমান ও ২০০৮ সাল পর্যন্ত জিএমজি এয়ালাইনস এবং ২০০৯ সাল পর্যন্ত ইউনাইটেড এয়ারলাইনসের চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের মধ্যে বিমান যোগাযোগ চালু ছিল। কিন্তু সব বিমান সংস্থা চালু রাখতে পারেনি সার্ভিস।