শুক্রবার   ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫   পৌষ ৫ ১৪৩২   ২৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

কারওয়ানবাজারে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, পুলিশ ফাঁড়ি চায় ডিএনসিসি

প্রকাশিত : ০৬:৪৬ পিএম, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ বৃহস্পতিবার

রাজধানীর কারওয়ানবাজারে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। কারওয়ানবাজারে একটি পুলিশ ফাঁড়ি চায় ডিএনসিসি। এ কারণে জায়গা দিতেও প্রস্তুত ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে ডিএনসিসি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে। ওই সময় কারওয়ান বাজারে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তরের মেয়র অতিকুল ইসলাম।

মেয়র অতিকুল ইসলাম বলেন, ‘মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে ফোন করেছিলেন। তিনি কারওয়ানবাজারে একটি পুলিশ ফাঁড়ি করার কথা বলেছেন।’

মেয়র বলেছেন, ‘কারওয়ানবাজারে কোনো পুলিশ ফাঁড়ি নেই। বাজারটি কন্ট্রোল করার জন্য একটি পুলিশ ফাঁড়ি করা প্রয়োজন।’

মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি গত মঙ্গলবার কারওয়ান বাজার এসেছিলাম। এসে দেখেছি, আমাদের ডিএনসিসির জায়গায় একটি ক্লাব রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে জায়গাটি তাঁরা দখল করে রেখেছে। পুলিশকে বলে ক্লাবটি অপসরণ করা হয়েছে। পুলিশ কমিশনার ও ডিসির সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ডিএনসিসির জায়গাটি আমরা পুলিশের কাছে হ্যান্ডওভার করে দেব। পারলে আগামী সপ্তাহেই পুলিশ ফাঁড়ির জায়গাটি আমি দিয়ে দেব।’

রাজধানীর কারওয়ানবাজারে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএনসিসি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম। ছবি : সাইফুল সুমন

প্রথমে শ্রমিক লীগ, পরে কৃষক লীগের কার্যালয় ভাঙল ডিএনসিসি

এর আগে রাজধানীর কারওয়ানবাজারের ডিএনসিসির আঞ্চলিক কার্যালয় সংলগ্ন এলাকার সড়ক ও ফুটপাত অবৈধ দখলমুক্ত করতে অভিযান চালিয়েছে ডিএনসিসি। অভিযানে প্রথমে তেজগাঁও শ্রমিক লীগের ২৬ নম্বর ওয়ার্ড কার্যালয় ও পরে একই ওয়ার্ডের কৃষক লীগের কার্যালয় গুঁড়িয়ে দেয় ডিএনসিসি ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ ছাড়া আরো কিছু স্থাপনা সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিদ আনোয়ারের নেতৃত্বে ওই অভিযান পরিচালিত হয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তেজগাঁও শ্রমিক লীগের ২৬ নম্বর ওয়ার্ড কার্যালয় ও পরে একই ওয়ার্ডের কৃষক লীগের কার্যালয় গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় ২৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যালয়ও।

ফলপট্টিও গুঁড়িয়ে দিল ডিএনসিসি

অভিযানের শুরুতে কারওয়ানবাজারের ফলপট্টিতে অভিযান চালিয়ে রেললাইনের পাশের সব দোকান উচ্ছেদ করা হয়। অভিযান শেষে ভেঙে পড়া দোকানগুলোর ভেতর থেকে ফলগুলোকে সরাতে দেখা যায় দোকান মালিকদের। 

অভিযান পরিচালনার সময় সাজিদ আনোয়ার বলেন, ‘ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ভেতরে সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। আজ এখানে অভিযান পরিচালনা করছি। সন্ধ্যা পর্যন্ত এ অভিযান চলবে। এভাবে সব এলাকায় শুদ্ধি অভিযান চালানো হবে। কার অফিস, কোন দলের অফিস তা দেখবে না সিটি করপোরেশন।’

‘ফুটপাত দখল করে কোনো ধরনের বাণিজ্য হবে না’

অভিযানের মধ্য পর্যায়ে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হন। সেসময় মেয়র বলেন, ‘ফুটপাত তো দখল হচ্ছেই, সঙ্গে রাস্তাও দখল হচ্ছে। এতে এই এলাকার মানুষজন কিন্তু অসম্ভব কষ্ট করছেন। কষ্ট করা ওইসব লোকজনই আমাদের বলছেন কীভাবে এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। ফুটপাত দখল করে কোনো ধরনের বাণিজ্য হবে না। জনগণ আমাদের সঙ্গে রয়েছে।’

মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘জনগণ সব ক্ষমতার উৎস। জনগণ যেটা চাইবে সেটাই কিন্তু হবে। আমাদের কাছে অজস্র অভিযোগ আসছে। গাড়িতে উঠতে গেলেও চাঁদা দিতে হয়। নামাতে গেলেও কিন্তু চাঁদা দিতে হয়। বিরাট বড় চাঁদার আখড়া কিন্তু এই কারওয়ানবাজার। কারওয়ানবাজারের বিকল্প তিনটি জায়গা তৈরি হচ্ছে আমাদের। একটি যাত্রাবাড়ি, একটি মিরপুর ও আরেকটি মহাখালীতে।’

ডিএনসিসির মেয়র বলেন, ‘আমার সঙ্গে কাঁচা বাজারের লোকদের কথা হয়েছে। তাঁরাও প্রস্তুত। কিন্তু তাঁরা আমাকে কিছু কিছু কাজের কথা বলেছে, সেই কাজগুলো শেষ হলে সব পর্যায়ক্রমে চলে যাবে। আমরা এসব নিয়ে কাজ করছি কারণ, কারওয়ানবাজার আমাদের একটি মূল হাট। এখানে খুচরা ও পাইকারীসহ সব ব্যবসায়ী আসে। এখানে ডিসিপ্লিন আনতে এখানকার সাংসদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাহায্য দরকার। এখানকার জনগণেরও কিন্তু সহযোগিতা দরকার। আমরা একটি মনিটরিং টিম করেছি। এই এলাকার কাউন্সিলরের নেতৃত্বে পুলিশ এবং সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে তাঁরা কাজ করবেন।’