মঙ্গলবার   ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫   পৌষ ১ ১৪৩২   ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

টিকে থাকাই চ্যালেঞ্জ বিএনপির

কক্সবাজার সৈকত

প্রকাশিত : ১১:২২ এএম, ১৬ নভেম্বর ২০১৮ শুক্রবার

বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট এবং নতুন গড়া জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে টিকে থাকতে পারবে কি না, সে প্রশ্ন এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। কারণ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েও এখনো স্বস্তিতে নেই দলগুলো।

বরং ওই সব জোটের প্রার্থীরা শেষ পর্যন্ত নির্বিঘ্নে নির্বাচনী প্রচার চালাতে পারবেন কি না সেটাই তাঁদের বড় চিন্তা। এ ছাড়া গ্রেপ্তার আতঙ্ক কাটিয়ে জোটের কর্মীদের নির্বাচনী এলাকায় নেওয়া যাবে কি না, সে দুশ্চিন্তাও আছে বিএনপিসহ জোটের নেতাদের মধ্যে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে এমনটি জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট নেতারা জানান, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সার্বিকভাবে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে জোটের নেতাকর্মীদের মধ্যে দুশ্চিন্তা সবচেয়ে বেশি। সে কারণেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বা সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরির দাবি নিয়ে ঐক্যফ্রন্ট বারবার নির্বাচন কমিশনে (ইসি) যাচ্ছে। গত বুধবারও ইসিতে গিয়ে ওই দাবি জানিয়ে আসে তারা।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ডা. জাহেদ উর রহমান বলেন, ‘আমরা টিকে থাকতে পারব কি না তার চেয়ে বড় প্রশ্ন, সরকার আমাদের টিকে থাকতে দেবে কি না। ’ নাগরিক ঐক্যের এই নেতা বলেন, ‘নানা উসকানি সত্ত্বেও ঐক্যফ্রন্ট ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। সরকার কোনো স্পেস না দিলে নির্বাচন থেকে সরে আসাও অস্বাভাবিক নয়। ’

গত বুধবার নাইকো দুর্নীতি মামলায় শুনানিতে খালেদা জিয়া আদালতে বলেন, ‘আমাদের আদালতে ব্যস্ত রাখলে নির্বাচন করব কিভাবে? অনেক প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে আমাদের এগোতে হচ্ছে। এর ওপর বারবার আদালতে আসতে হলে বলে দেন আমরা নির্বাচনে না যাই। ’

নির্বাচনে অংশ নিয়ে গণজোয়ার সৃষ্টি করতে পারলে একপর্যায়ে প্রশাসন পক্ষপাতমূলক ভূমিকা থেকে সরে আসবে—এমন আশা থেকেই বিএনপি ও তার মিত্ররা ওই সিদ্ধান্ত নেয়। আবার রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকেও বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেওয়াই ভালো উপায় বলে মনে করে। কিন্তু গ্রেপ্তার আতঙ্ক এখনো বিএনপি ও মিত্রদের দুশ্চিন্তার বড় কারণ বলে আলোচনা আছে।    

বিএনপির দাবি, সারা দেশে দলটির নেতাকর্মীদের নামে কয়েক হাজার মামলা আছে এবং এতে কয়েক লাখ আসামি। প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৭ ও ১৩ নভেম্বর দুই দফায় বিএনপির পক্ষ থেকে মোট দুই হাজার ৪৮টি ‘গায়েবি’ মামলার তালিকা জমা দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। এতে মোট আসামি উল্লেখ করা হয়েছে এক লাখ ৩২ হাজার ৯২৬ জন। এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আসামির সংখ্যা কয়েক লাখ। গত ১ নভেম্বরের প্রথম দফা সংলাপে নির্বাচনের আগে এসব মামলা তুলে বা স্থগিত করে নির্বাচনে প্রচারের সুযোগ প্রধানমন্ত্রীর কাছে চেয়েছে বিএনপি, যদিও এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি। নির্বাচনী প্রচারে নামলেই ওই সব মামলায় গ্রেপ্তার করে নেতাকর্মীদের নিষ্ক্রিয় করা হবে বলে বিএনপি জোটের মধ্যে আশঙ্কা আছে।