সোমবার   ০৬ অক্টোবর ২০২৫   আশ্বিন ২০ ১৪৩২   ১৩ রবিউস সানি ১৪৪৭

সেটেই শ্লীলতাহানি, মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ অভিনেত্রী

বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশিত : ০৭:৩৯ পিএম, ২৩ জুন ২০১৯ রোববার

কলকাতা উষসী কাণ্ডের ছায়া মায়ানগরী মুম্বাইতেও। ওয়েব শোয়ের শুটিং চলাকালীন একদল মদ্যপ যুবকের হাতে আক্রান্ত হন অভিনেত্রী মাহি গিল। মাহির পাশাপাশি আক্রান্ত হন ইন্ডাস্ট্রির একাধিক সদস্যও। সেই সময় পুরো ঘটনার ভিডিও করেন সেটে উপস্থিত প্রযোজক তিগমাংশু ধুলিয়া। ভিডিও ভাইরাল হতেই নড়েচড়ে বসে মুম্বাই প্রশাসন। তবে পুলিশের গাফিলতি থাকায় সেদিন অভিযোগ দায়ের করাতে গিয়ে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল মাহি-সহ গোটা টিমকে। সেই ঘটনার প্রতিবাদে রীতিমতো আতঙ্কিত অভিনেত্রী মাহি-সহ গোটা টিম। ফের যদি হামলা হয়, এমন ভয়ই এখন তাদের ঘিরে ধরেছে। কেন খাস শহরের বুকে এহেন কাণ্ড ঘটবে? সেই প্রশ্ন তুলে সম্প্রতি তারা দেখা করে এসেছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবিসের সঙ্গে।

ঠিক কী হয়েছিল সেদিন? থানের গড়বুন্দ রোডের এক পরিত্যক্ত কারখানায় অল্টবালাজির ওয়েব সিরিজ ‘ফিক্সার’-এর শুটিং চলছিল। সেসময়ে হঠাৎই চার-পাঁচজন মদ্যপ যুবক সেটে ঢুকে লাঠি হাতে হামলা করেন বলে অভিযোগ জানান ওই ওয়েব সিরিজের ক্রুয়ের সদস্যরা। টুইটারে ওই ঘটনার একটি ভিডিও শেয়ার করেন অভিনেতা তথা ছবি নির্মাতা তিগমাংশু ধুলিয়া। ভিডিওতেই দেখা গিয়েছে, ওই ঘটনার সময় সেখানে তিগমাংশু ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী মাহি গিল, প্রযোজক সাকেত সাহানি এবং পরিচালক সোহম শাহ প্রমুখ। গোটা ঘটনায় ভয় পেয়ে দৌড়ে একটি গাড়ির মধ্যে গিয়ে বসে পড়েন মাহি গিল। ‘এমন ঘটনা এই প্রথম দেখলাম আমি’-বলছেন মাহি।

কেন এমন ঘটল? এপ্রসঙ্গে তিগমাংশুকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জানান, যে জায়গায় বুধবার ‘ফিক্সার’ টিম সেট ফেলেছিল, সেখানে শুটিং করার জন্য আগাম অনুমতি নিয়েছিলেন তারা। এমনকী, ওই নির্দিষ্ট জায়গায় শুটিংয়ের জন্য যাবতীয় খরচ বাবদ ৫ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। তবে, ঘটনার দিন পুলিশ অনুমতির কাগজপত্র দেখতে চাইলে, তা দেখাতে পারেননি সহ-প্রযোজক সংকেত। তাই কোনওরকম পুলিশি পরিষেবা পাননি তারা। উলটে তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

ঘটনার পর সাকেত বলেন, ‘আমাদের সবরকম প্রয়োজনীয় অনুমতি ছিল। সকাল সাতটা থেকে শুটিং করছিলাম। বিকেল চারটে-সাড়ে চারটে নাগাদ চার জন মদ্যপ যুবক হাতে লাঠি, রড নিয়ে এসে হঠাৎই আমাদের শিল্পী, কলাকুশলীদের মারতে শুরু করে। ওরা বলছিল, ওটা ওদের জায়গা। ওদের অনুমতি ছাড়া শুটিং করা যাবে না। আমাদের কথা বলার কোনও সুযোগই দেয়নি। মেয়েদের সঙ্গেও খুব খারাপ ব্যবহার শুরু করে। এমনকি, মাহিকে হেনস্তা করে।’ পুলিশি পরিষেবা নিয়ে তার বক্তব্য, রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় কেউ পড়ে থাকলে তাকে চিকিৎসা পদ্ধতি শুরু করার বদলে কি আধার কার্ড কিংবা পরিচয়পত্র চাইবে কেউ? পুলিশদের ব্যবহারও সেদিন এরকমই ছিল। ওরা সাহায্য করার পরিবর্তে আমাদের কাছে অনুমতিপত্র দেখতে চেয়েছিল।

পুলিশি গাফিলতির জন্য তারা রীতিমতো বিরক্ত। যে ঘটনার প্রতিবাদে মাহি গিল, শাব্বির আলুওয়ালিয়া, শোয়ের প্রযোজক তিগমাংশু ধুলিয়া, সহ-প্রযোজক সংকেত সাহানি, সোহম শাহ এবং ইন্ডিয়ান ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ডিরেক্টরস অ্যাসোশিয়েশনের সভাপতি অশোক পণ্ডিত সম্প্রতি দেখা করে এসেছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবিসের সঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রীর তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে খুব শিগগিরিই পুলিশ প্রশাসনের গাফিলতি রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। উল্লেখ্য ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছে তিন অভিযুক্ত।