বুশরা বিবির কারাজীবন আন্তর্জাতিক মানের নিচে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত : ০৪:২২ পিএম, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫ সোমবার
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবির কারাবন্দী জীবনের শোচনীয় অবস্থা এবং কারা-পরিবেশ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের নির্যাতন বিষয়ক বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার অ্যালিস জিল এডওয়ার্ডস এই পরিস্থিতির তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, বুশরা বিবির বর্তমান আটক পরিবেশ ন্যূনতম আন্তর্জাতিক মানের চেয়েও অনেক নিচে।
পাকিস্তানের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম 'ডন'-এর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর (OHCHR) থেকে প্রকাশিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বুশরা বিবির মানবেতর জীবনের চিত্র ফুটে উঠেছে। বর্তমানে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে আটক বুশরা বিবির অবস্থা সম্পর্কে জানানো হয়। তাঁকে রাখা হয়েছে একটি অত্যন্ত ছোট এবং বাতাস চলাচলহীন কক্ষে, যা নোংরা, অস্বাস্থ্যকর এবং পোকামাকড় ও ইঁদুরে ভরা। ঘনঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে কক্ষটি প্রায়ই অন্ধকার থাকে। তাঁকে সরবরাহ করা হচ্ছে নোংরা পানীয় জল। তাঁকে যে খাবার দেওয়া হচ্ছে তাতে অতিরিক্ত মরিচ থাকায় তা খাওয়ার অযোগ্য বলে অভিযোগ উঠেছে।
কারাগারের এই প্রতিকূল পরিবেশের কারণে বুশরা বিবির শারীরিক অবস্থার মারাত্মক অবনতি ঘটেছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় তাঁর ওজন প্রায় ১৫ কেজি কমে গেছে। তিনি বারবার অসুস্থ হয়ে পড়ছেন এবং কয়েকবার অজ্ঞান হয়ে পড়েছেন। তাঁর দাঁতের ফোঁড়া ও পাকস্থলীর আলসারের মতো গুরুতর সমস্যা থাকলেও কোনো সুচিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না।
বিশেষ প্রতিবেদক অ্যালিস জিল এডওয়ার্ডস বলেন, "রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো বুশরা বিবি খানের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা। কোনো বন্দিকে এমন চরম গরম বা দূষিত খাবার-পানির মুখে ফেলা উচিত নয় যা তাঁর অসুস্থতাকে আরও বাড়িয়ে তোলে।"
বুশরা বিবিকে প্রায়ই দিনে ২২ ঘণ্টারও বেশি সময় সম্পূর্ণ নিঃসঙ্গ অবস্থায় রাখা হচ্ছে। কখনো কখনো টানা ১০ দিন তিনি একা থাকছেন। এই দীর্ঘ নিঃসঙ্গতাকে মানসিক নির্যাতনের শামিল বলে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘ। এছাড়া তাঁকে ব্যায়াম, বইপত্র, আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ এবং পরিবারের সদস্যদের সাথে সাক্ষাৎ থেকেও বঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে।
এডওয়ার্ডস আরও জানান, তিনি বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে পাকিস্তান সরকারের কাছে তুলেছেন এবং বুশরা বিবির পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন।
উল্লেখ্য, ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবি ছাড়াও ইমরান খান নিজেও ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে কারাবন্দী রয়েছেন। পাকিস্তানের বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মাঝে বুশরা বিবির এই কারাবাস বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার কর্মীদের নজর কেড়েছে।
