মঙ্গলবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫   পৌষ ৯ ১৪৩২   ০৩ রজব ১৪৪৭

সিরীয়ায় সেনাবাহিনী ও এসডিএফের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, হতাহত ১৩

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত : ০৯:৩৭ এএম, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ মঙ্গলবার

সিরিয়ার আলেপ্পো শহরে সিরীয় সেনাবাহিনী এবং কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেসের (এসডিএফ) মধ্যে এক ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দিনভর চলা এই রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ে অন্তত দুইজন নিহত এবং ১১ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের তীব্রতায় শেইখান ও লায়রমুন গোলচত্বর এলাকা থেকে বহু পরিবার ও স্থানীয় শ্রমিক ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।

 

 

আলজাজিরার প্রতিবেদন ও সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানা (SANA) জানায়, সোমবার বিকেলে আলেপ্পোর শেখ মাকসুদ ও আশরাফিয়াহ এলাকার চেকপোস্টে এই সংঘাতের সূত্রপাত হয়। সংঘর্ষে ভারি মেশিনগান ও মর্টার শেল ব্যবহার করা হয়েছে। সিরিয়ান সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, এসডিএফের গুলিতে তাদের দুইজন উদ্ধারকর্মী এবং শেইখান গোলচত্বরে দুই শিশু গুরুতর আহত হয়েছে।

 

সিরিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এসডিএফকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ উল্লেখ করে বলেছে, তাদের হামলায় একজন সেনা সদস্যসহ দুজন নিরাপত্তা কর্মী আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, এসডিএফ বেসামরিক এলাকায় হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে সরকার সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীগুলোকেই এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী করেছে।

 

 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই সংঘর্ষের পেছনে ‘অনুঘটক’ হিসেবে কাজ করেছে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদানের দামেস্ক সফর। বর্তমানে সিরীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে তুরস্কের পক্ষ থেকে এসডিএফ-কে নতুন সিরীয় সেনাবাহিনীতে একীভূত করার বিষয়ে আলোচনা চলছে।  দামেস্ক প্রস্তাব দিয়েছে প্রায় ৫০ হাজার এসডিএফ যোদ্ধাকে তিনটি ডিভিশনে একীভূত করার।  তুরস্ক এই প্রস্তাবের ঘোর বিরোধিতা করে এসডিএফ-এর বর্তমান কমান্ড কাঠামো পুরোপুরি ভেঙে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। তুরস্ক এসডিএফ-কে নিষিদ্ধ ঘোষিত পিকেকে (PKK)-এর সাথে সংশ্লিষ্ট একটি ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে বিবেচনা করে।

 

 

ঘণ্টাব্যাপী চলা এই উত্তেজনার পর সোমবার গভীর রাতে উভয় পক্ষ গোলাবর্ষণ বন্ধে সম্মত হয়েছে। সিরীয় সেনাবাহিনীর জেনারেল স্টাফ এবং এসডিএফ কর্তৃপক্ষ নিজ নিজ বাহিনীকে পালটা জবাব বন্ধের নির্দেশ দেওয়ায় আলেপ্পোতে বর্তমানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

২০১৫ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত এসডিএফ সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। এসডিএফকে সিরীয় বাহিনীতে একীভূত করার প্রশ্নটি এখন সিরিয়ার জাতীয় ঐক্যের জন্য সবচেয়ে স্পর্শকাতর ইস্যু হিসেবে দাঁড়িয়েছে।