লাকসামের উন্নয়নে অর্থনৈতিক জোনের বিকল্প নেই
লাকসাম, কুমিল্লা,প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৬:৪৩ পিএম, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ সোমবার
কুমিল্লার দ¶িনাঞ্চলের বৃহত্তর লাকসাম উপজেলায় প্রয়োজনীয় শিল্পায়নের অভাবে হাজার হাজার যুবক বর্তমানে কর্মহীন জীবন-যাপন করছে। স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫৪ বছর পার হলেও এ অঞ্চলে প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক জোন বাস্তবায়ন হচ্ছে না। ফলে এ অঞ্চলে বেকার যুবকের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
লাকসাম শহরে সরকারী ভাবে গড়ে উঠা হাউজিং এষ্টেট বর্তমানে বানিজ্যিক নগরীতে পরিনত হলেও উপে¶িত রয়ে গেলো লাকসামে বিসিক শিল্প নগরী গড়ে তোলা এবং জেলা বাস্তবায়নের দাবী। তবে বিগত সরকার এ পৌরসভার উন্নয়নে প্রায় ৫’শ কোটি টাকার নানাহ প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এবং এমনকি স্মাটসিটি হিসেবে গড়ে তুলতে এ শহরকে নানা মুখি উন্নয়ন কর্মকান্ড হাতে নিলেও অনিয়ম ও দূর্নীতির কবলে পড়ে তা আজ লাল ফিতায় বন্দি।
বিশেষ করে সকল উন্নয়ন কর্মকান্ডের তদন্ত দাবী করছেন এলাকাবাসী। লাকসাম পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার নার্গিস সুলতানা যোগদানের পর থেকে নাগরিক সুবিধা বাড়াতে পৌর ও উপজেলায় ব্যাপক সংস্কার ও উন্নয়ন কার্যক্রমে হাত নিয়েছেন। দেখাযাক তিনি কতটুকু সফলতা বয়ে আনতে পারে তা অবশ্য সময় বলে দিবে। তবে বিগত সরকারের নেয়া উন্নয়ন কর্মকান্ড গুলোর একাদিক প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নিতির অভিযোগ বিদ্দমান।
বিশেষ করে ৫ই আগষ্টের পর একাধিক প্রকল্পের ঠিকাদার কাজ পেলে উদাও। পরক্ষনে কিছু কিছু প্রকল্পের কাজ একটি রাজনৈতিক দলের নেতারা জবর দখল করে কাজ শুরু করে কিন্তু কাজের মান অতান্ত নিম্মমানের। এ ব্যাপারে জেলা-উপজেলা প্রশাসনের সুষ্ট দাবি এলাকাবাসীর। জানাযায়, বর্তমানে জেলা দক্ষিনাঞ্চলের উপজেলা গুলোর ব্যবসা-বানিজ্যে নানাহ কারনে স্থবিরতা বিরাজ করছে। স্থানীয় ভাবে এখানে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি না হওয়ায় বেকারত্বের পাশাপাশি দারিদ্রতাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারি ভাবে লাকসামে বিসিক শিল্প নগরী স্থাপন ও স্থানীয় শিল্পোদ্যক্তারা আন্তরিক হলে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আয়ের পাশাপাশি জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখবে বলে এলকাবাসীর দাবী।
রেল, নৌ ও সড়ক যোগাযোগ, অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ, স্থানীয় কাঁচামালের অপার সম্ভার, আবাদি কৃষি জমিসহ নানা সুবিধার দিক দিয়ে এ অঞ্চলে শিল্প কারখানা গড়ে তোর্লাধসঢ়; উজ্জ্বল সম্ভাবনা থাকলেও শিল্পকারখানা স্থাপনে উদ্যোগ নেই। স্বাধীনতার ৫৪ বছরে বিভিন্ন দলীয় সরকার ¶মতায় এসে এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটালেও বেশকিছূ বিভিন্ন ধরনের শিল্পকারখানা স্থাপন হলেও উল্লেখযোগ্য কোন শিল্পকারখানা গড়ে উঠেনি। দ¶িণ কুমিল্লার সুনামধন্য শিল্পদ্যোক্তা ভাইয়া গ্রুপ, শাহজালাল গ্রুপ, রূপসা গ্রুপ, লোটাস কামাল গ্রুপ, আজাদ গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, ফেবিয়ান গ্রুপ, আলানা গ্রুপ, ফেমাস গ্রুপ, নাসা গ্রুপ, এসওএস গ্রুপ, চৈতি গ্রুপ, মরহুম চাঁন মিয়া ও সুরুজ মিয়ার পরিবারসহ এ অঞ্চলের বিত্তশালী পরিবারগুলো একটু আন্তরিক হলে শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপনের মাধ্যমে এলাকার প্রভুত উন্নয়নে অবদান রাখতে পারেন।
সূত্রটি আরো জানায়, কৃষি প্রধান এলাকা হিসেবে বৃহত্তর লাকসাম উপজেলার নাঙ্গলকোট, লালমাই ও মনোহরগঞ্জ উপজেলায় কৃষি ও মৎস্য ভিত্তিক বিনিয়োগের চাহিদা ও ভৌগলিক অবস্থানের কারনে অল্প খরচে স্বল্প সময়ে ব্যাপক শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা সম্ভব। ভারতীয় উপমহাদেশের একমাত্র নারী নবাব নওয়াব ফয়জুন্নেছার জন্মস্থানখ্যাত লাকসাম শতাব্দিকাল থেকে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও শি¶া ¶েত্রে বিশেষ ঐতিহ্য বহন করছে। দেশ স্বাধীনের পর থেকে বহু সরকার প্রধান, শত শত মন্ত্রী, আমলা. এমপি এ অঞ্চলে পদচারনাকালে লাকসামকে শিল্পনগরী গড়ে তোলার আশ্বাস দিলেও তা লাল ফিতায় বন্ধী হয়ে পড়েছে। এখানে বসবাস ছিলো এ অঞ্চলের অন্যতম কৃতি সন্তান সাবেক গণপরিষদ সদস্য আবদুল আউয়াল, সাবেক এমপি জালাল আহমদ, অধ্য¶ আবুল কালাম মজুমদার, ব্যারিষ্টার হাবিবুল হক, প্রফেসর নুর উর রহমান, ওমর আহমদ মজুমদার, ভাষাসৈনিক কমরেড জিন্নতের রহমানসহ অনেক খ্যাতিমান ব্যাক্তির। বিগত দিনে রয়েছেন কুমিল্লা- ৯ আসনের ৪ বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ও শিল্পপতি মোঃ তাজুল ইসলাম, নজরুল
ইসলাম মজুমদার হেলাল, সাবেক এমপি কর্ণেল (অবঃ) এম. আনোয়ারুল আজিম, (নিখোঁজ) সাবেক এমপি আলহাজ্ব সাইফুল ইসলাম হিরু, সাবেক এমপি মরহুম এটিএম আলমগীর, সাবেক এমপি মনিরুল হক চৌধুরী, সাবেক এমপি মরহুম ডাঃ রফিকুল হোসাইন, সাবেক এমপি আবদুল গফুর ভ’ঁইয়া, সাবেক এমপি মরহুম জয়নাল আবদীন ভুঁইয়া ও সাবেক এমপি ডাঃ কামরুজ্জামানসহ অনেক খ্যাতিমান ব্যাক্তিত্ব। এছাড়াও প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়, বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের সচিব-উপসচিব ও প্রথিতযশা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানসহ উচ্চ পর্যায়ের বিভিন্ন দায়িত্বে রয়েছে এ অঞ্চলের শত শত ব্যাক্তিবর্গ। অথচ স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও বৃহত্তর লাকসামের উন্নয়নে কাজ করেনি তারা।
