রোববার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৫   পৌষ ৭ ১৪৩২   ০১ রজব ১৪৪৭

বাংলাদেশের দুর্বল ব্যাংক কিনতে চীনকে প্রস্তাব

তরুণ কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত : ১০:৪১ এএম, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ রোববার

বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে প্রতি বছর প্রায় আড়াই লাখ কোটি টাকার বিশাল বাণিজ্য চললেও দেশে এখন পর্যন্ত কোনো চীনা ব্যাংক নেই। ফলে আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের টাকা থেকে ডলার এবং ডলার থেকে ইউয়ানে রূপান্তর করতে গিয়ে কয়েক ধাপে বাড়তি মাশুল গুনতে হচ্ছে। এই জটিলতা কাটাতে এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সহজ করতে বাংলাদেশের একটি দুর্বল ব্যাংক কিনে নিতে চীনকে প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিসিসিআই)।

 

 

বর্তমানে বিশ্বের যেকোনো দেশ থেকে পণ্য কিনতে হলে বাংলাদেশকে প্রথমে দেশীয় মুদ্রা টাকাকে ডলারে এবং পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট দেশের মুদ্রায় রূপান্তর করতে হয়। এতে একাধিকবার চার্জ দিতে হয়, যার সরাসরি প্রভাব পড়ে পণ্যের খুচরা মূল্যে। বাংলাদেশের মোট আমদানির প্রায় ২৫ শতাংশই আসে চীন থেকে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে চীন থেকে ১৬.৬৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি হলেও দেশটিতে রপ্তানি হয়েছে মাত্র ৭১৫.৩৭ মিলিয়ন ডলার। এই বিশাল বাণিজ্য ঘাটতির মাঝেও চীনা ব্যাংক না থাকায় আমদানিকারকরা চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন।

 

 

বিজিএমইএর ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. শিহাব উদ্দোজা চৌধুরী মনে করেন, চীনা ব্যাংক থাকলে এলসি (LC) খোলা ও অর্থ পরিশোধের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের সুবিধা পাবেন। পাশাপাশি বাংলাদেশে চলমান চীনা অর্থায়নের উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর লেনদেনও অনেক সহজ হবে।

বাংলাদেশ-চায়না চেম্বারের সভাপতি মোহা. খোরশেদ আলম একটি ভিন্নধর্মী প্রস্তাব সামনে এনেছেন। তিনি জানান:

 

“বাংলাদেশে চীনের ব্যাংক থাকলে এলসিতে খরচ অন্তত ১ শতাংশ কমবে। আমাদের বর্তমানে ২০টি ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা নাজুক। চীন চাইলে এখান থেকে যেকোনো একটি দুর্বল ব্যাংক কিনে নিতে পারে। এতে কারিগরি দক্ষতাও বাড়বে।”

 

 

অর্থনীতিবিদরা এই প্রস্তাবকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। তাদের মতে, সরাসরি চীনা ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন হলে ডলারের ওপর নির্ভরতা কমবে। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ বলেন:

 

“এখানে চাইনিজ ব্যাংক থাকলে এবং তারা আমাদের ন্যাশনাল রেগুলেশনের চেয়ে ভালো রেগুলেশনে মূলধন দিতে পারে, তবে সম্ভবত এটি আমাদের ব্যাংকিং খাতের অস্থিরতা থেকে মুক্তির একটি উপায় হবে।”

 

আর্থিক খাত সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, চীন যদি এই প্রস্তাবে সাড়া দেয়, তবে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে নতুন মূলধনের সরবরাহ বাড়বে এবং ডলার সংকটের এই সময়ে বৈদেশিক বাণিজ্যে স্বস্তি ফিরবে।