রোববার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৫   পৌষ ৭ ১৪৩২   ০১ রজব ১৪৪৭

শান্তিরক্ষী মিশনে শহীদ ৬ সেনার জানাজা সম্পন্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত : ১০:৩১ এএম, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ রোববার

দক্ষিণ সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত অবস্থায় বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠীর ড্রোন হামলায় শহীদ হওয়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয় সদস্যের জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) সকাল সোয়া ৯টার পর ঢাকা সেনানিবাসের কেন্দ্রীয় মসজিদে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ ও শোকাতুর পরিবেশে তাদের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।

 

রাষ্ট্রীয় ও সামরিক শ্রদ্ধা জানাজা শেষে শহীদ শান্তিরক্ষীদের কফিনে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে গভীর শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর একে একে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে তিন বাহিনীর প্রধানগণ শহীদদের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর, প্রদান করা হয় ‘গার্ড অব অনার’।

 

জানাজার আগে উপস্থিত সকলের সামনে নিহত সেনাসদস্যদের সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত পড়ে শোনানো হয় এবং তাঁদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়। আনুষ্ঠানিকতা শেষে শহীদদের মরদেহ হেলিকপ্টারযোগে তাঁদের নিজ নিজ জেলায় দাফনের জন্য পাঠানো হয়েছে।

 

শহীদ ৬ শান্তিরক্ষীর পরিচয় দেশের তরে প্রাণ বিসর্জন দেওয়া এই বীরেরা হলেন:

১. করপোরাল মো. মাসুদ রানা (নাটোর)

২. সৈনিক মো. মমিনুল ইসলাম (কুড়িগ্রাম)

৩. সৈনিক শান্ত মন্ডল (কুড়িগ্রাম)

৪. সৈনিক শামীম রেজা (রাজবাড়ী)

৫. মেস ওয়েটার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম (কিশোরগঞ্জ)

৬. লন্ড্রি কর্মচারী মো. সবুজ মিয়া (গাইবান্ধা)

 

যেভাবে ঘটেছিল সেই বিয়োগান্তক ঘটনা গত ১৩ ডিসেম্বর দক্ষিণ সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের আওতাধীন কাদুগলি লজিস্টিকস বেইসে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠী হঠাৎ ড্রোন হামলা চালায়। এতে ডিউটিরত অবস্থায় বাংলাদেশের ৬ জন শান্তিরক্ষী শহীদ হন এবং ৯ জন সদস্য গুরুতর আহত হন।

 

গতকাল শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে শহীদ সেনাদের মরদেহ নিয়ে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইট ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। সেখানে মরদেহগুলো গ্রহণ করেন সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম।

 

চিকিৎসাধীন আহত শান্তিরক্ষীরা হামলায় আহত ৯ জন শান্তিরক্ষী বর্তমানে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। তাঁরা হলেন— লেফটেন্যান্ট কর্নেল খোন্দকার খালেকুজ্জামান, সার্জেন্ট মো. মোস্তাকিম হোসেন, করপোরাল আফরোজা পারভিন ইতি, ল্যান্স করপোরাল মহিবুল ইসলাম, সৈনিক মো. মেজবাউল কবির, সৈনিক মোসা. উম্মে হানি আক্তার, সৈনিক চুমকি আক্তার এবং সৈনিক মো. মানাজির আহসান।