যেখানে থেমে ছিল সময়, সেখানেই জাগছে রাজনীতি
ওয়াফিক শিপলু
প্রকাশিত : ০৬:৪৪ পিএম, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ শনিবার
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে বগুড়ায় রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। শহরের সূত্রাপুর এলাকার রিয়াজ কাজী লেনে অবস্থিত যে বাড়িটিতে দেশে থাকার সময় তারেক রহমান অবস্থান করতেন, সেই বাড়িটির সংস্কারকাজ শুরু হয়েছে।
বাড়িটি সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হেলালুজ্জামান তালুকদার লালুর। দীর্ঘদিন অযত্ন ও অবহেলায় পড়ে থাকায় বাড়িটি প্রায় পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। গেট ও দেয়ালের রং চটে যাওয়া, পরিচর্যার অভাব—সব মিলিয়ে সময়ের সাক্ষী হয়ে নীরবে দাঁড়িয়ে ছিল বাড়িটি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দেশে অবস্থানকালে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াতের সময় তারেক রহমান নিয়মিত এই বাড়িতে রাত্রিযাপন করতেন। এখান থেকেই তিনি বগুড়া ও উত্তরের জেলাগুলোর রাজনৈতিক কার্যক্রম সমন্বয় করতেন এবং শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনা করতেন।
নেতাকর্মীরা জানান, বহু বছর আগে হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু তার নিজ বাড়ির পাশে প্রায় পাঁচ শতাংশ জমি মৌখিকভাবে তারেক রহমানকে দেন। পরে সেখানে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ নিজস্ব পছন্দ অনুযায়ী নকশা করে বাড়িটি নির্মাণ করেন তারেক রহমান। ওই বাড়িটিকেই তিনি রাজনৈতিক ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করতেন।
ওয়ান-ইলেভেনের সময় তারেক রহমান গ্রেপ্তার হওয়ার পর মুক্ত হয়ে যুক্তরাজ্যে চলে যান। এরপর থেকে বাড়িটিতে কোনো কেয়ারটেকার না থাকায় এটি ধীরে ধীরে অবহেলার শিকার হয়। পথচারীরা আজও বাড়িটির পাশ দিয়ে গেলে এক নজর তাকিয়ে দেখেন—রাজনৈতিক ইতিহাসের নীরব সাক্ষী হয়ে থাকা বাড়িটি।
এর আগে খালেদা জিয়ার অসুস্থতা কিংবা ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেও তারেক রহমানের দেশে ফেরার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হলেও বাড়িটি সংস্কার করা হয়নি। তবে এবার যুক্তরাজ্য থেকে আগামী ২৫ ডিসেম্বর তারেক রহমানের দেশে ফেরার তারিখ চূড়ান্ত হওয়ায়, সংস্কারকাজ শুরু হয়েছে।
রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন রয়েছে, বগুড়া-৬ (সদর) আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন তারেক রহমান। সে ক্ষেত্রে এই বাড়িটিই হবে তার নির্বাচনী কর্মকাণ্ডের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র।
এ বিষয়ে হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু বলেন,
“আমার বাড়ির পাশেই তারেক রহমানের বাড়ি। জায়গাটি আমি দিয়েছি ঠিকই, তবে উনি নিজের পছন্দ অনুযায়ী নকশা করে বাড়ি নির্মাণ করেন। ওই বাড়ি থেকেই বগুড়া তথা উত্তরের সংগঠনের খোঁজখবর নিতেন তিনি। রাতভর রাজনৈতিক আলোচনা চলত, আর বাড়ির বাইরে হাজার হাজার নেতাকর্মী অবস্থান করতেন।
তিনি আরও বলেন,
তারেক রহমানের দেশে ফেরার তারিখ ঘোষণার পরই বাড়িটির সংস্কারকাজ শুরু হয়েছে। কাজ এখনো চলমান। দেশে ফিরে শুরুতে তিনি ঢাকায় ব্যস্ত থাকবেন, এরপর বগুড়ায় আসবেন। কারণ বগুড়া-৬ আসন থেকে তিনি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এজন্য তাকে এখানে মাঝেমধ্যই থাকতে হবে।
তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন ও এই বাড়ির সংস্কারকে ঘিরে বগুড়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে বাড়ছে প্রত্যাশা, উত্তেজনা ও নতুন করে সক্রিয়তা।
