শুক্রবার   ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫   পৌষ ৪ ১৪৩২   ২৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কে তীব্র উত্তেজনা: আজ খুলছে ভারতীয় ভিসা কেন্দ্র

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত : ১০:৪৬ এএম, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ বৃহস্পতিবার

বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের টানাপোড়েন এক নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। গতকাল বুধবার দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম রিয়াজ হামিদুল্লাহকে তলব করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর মাত্র দুই ঘণ্টা আগে ঢাকায় ভারতীয় ভিসা কেন্দ্রের (আইভেক) কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে ভারতের কূটনৈতিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কে অবস্থিত ভিসা কেন্দ্রের কার্যক্রম আজ বৃহস্পতিবার থেকে পুনরায় স্বাভাবিক নিয়মে চালু থাকবে।

 

 

গত রোববার ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করার দুই দিনের মাথায় দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করল ভারত। গতকাল সকালে ফোন করে মাত্র ঘণ্টা দেড়েকের নোটিশে রিয়াজ হামিদুল্লাহকে দিল্লির জওহরলাল নেহরু ভবনে ডাকা হয়। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (বাংলাদেশ-মিয়ানমার বিভাগ) বি শ্যামের সঙ্গে তাঁর প্রায় ১৫ মিনিটের আলোচনা হয়।

 

ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশে ‘ক্রমাবনতিশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতি’ এবং ভারতীয় মিশনের সামনে কিছু ‘চরমপন্থী গোষ্ঠীর’ বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়ে তারা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। কূটনৈতিক বাধ্যবাধকতার আলোকে ভারতীয় মিশন ও কূটনীতিকদের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।

 

 

দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার দ্ব্যর্থহীনভাবে জানিয়েছেন, একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ ভারতীয় মিশন ও কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত রাখবে।

এদিকে গতকাল বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ভারতের সাম্প্রতিক বক্তব্যকে ‘নসিহত’ হিসেবে অভিহিত করে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেন:

 

"বাংলাদেশে নির্বাচন কেমন হবে, এটা নিয়ে আমরা প্রতিবেশীদের উপদেশ চাই না। গত ১৫ বছর যখন প্রহসনমূলক নির্বাচন হয়েছে, তখন ভারত একটি শব্দও উচ্চারণ করেনি। এখন আমরা একটি উঁচু মানের নির্বাচনের দিকে যাচ্ছি, এই মুহূর্তে নসিহতের কোনো প্রয়োজন নেই।"

 

 

কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সম্পর্কের এই উত্তেজনার পেছনে সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনা অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে:

  • শেখ হাসিনার বক্তব্য: ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনার বাংলাদেশবিরোধী উসকানিমূলক বক্তব্য বন্ধ করতে ঢাকার অব্যাহত অনুরোধ।

  • হাদি হত্যাচেষ্টা: ইনকিলাব মঞ্চের শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার চেষ্টাকারীরা ভারতে পালিয়ে গেছে বলে আলোচনা এবং তাদের ফেরত চাওয়ার দাবি।

  • বিজয় দিবসের বার্তা: বিজয় দিবসে নরেন্দ্র মোদির বার্তায় বাংলাদেশের নাম উল্লেখ না থাকা নিয়ে অসন্তোষ।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন স্পষ্ট করে বলেন, "ভারত যদি শেখ হাসিনাকে থামাতে না চায়, আমরা থামাতে পারব না। তবে উসকানিমূলক বক্তব্য বন্ধ করাটা হবে একটি ভালো পদক্ষেপ।"