অপেক্ষার অবসান: আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নির্বাচন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ০৬:৫৫ পিএম, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫ বৃহস্পতিবার
দীর্ঘ ১৬ মাসের অন্তর্বর্তী সরকারের অপেক্ষার পর অবশেষে ঘোষণা হলো বহুল প্রতীক্ষিত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন ঘোষণা করলেন, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে ৩০০ আসনে ভোট গ্রহণ করা হবে। দেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসের এক জটিল সন্ধিক্ষণে এই নির্বাচন আয়োজিত হতে যাচ্ছে। একই দিনে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোটও অনুষ্ঠিত হবে বলে সিইসি নিশ্চিত করেছেন।
সিইসি নাসির উদ্দীনের ঘোষণা অনুযায়ী, নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রক্রিয়াটি দ্রুত শুরু হচ্ছে। সময়সূচিটি নিম্নরূপ:
| কার্যক্রম | তারিখ |
| মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় | ২৯ ডিসেম্বর |
| মনোনয়নপত্র বাছাই | ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি |
| আপিল নিষ্পত্তি | ১২ থেকে ১৮ জানুয়ারি |
| প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় | ২০ জানুয়ারি |
| প্রতীক বরাদ্দ | ২১ জানুয়ারি |
| ভোট গ্রহণ | ১২ ফেব্রুয়ারি |
ভোট গ্রহণ চলবে সকাল সাড়ে সাতটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত, যা সময় ব্যবস্থাপনার কারণে এবার এক ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর গঠিত অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনের এই তারিখটি ঘোষণা করে। একই দিনে জাতীয় নির্বাচন এবং গণভোট আয়োজনকে ইসি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে।
সিইসি তাঁর ভাষণে জানিয়েছেন, এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ১২ কোটি ৭৬ লাখের বেশি। প্রায় তিন লাখ প্রবাসী বাংলাদেশিও এবার পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এবার সরকার সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিচ্ছে। ঘোষণা করা হয়েছে যে:
-
সশস্ত্র বাহিনীসহ প্রায় ৯ লাখ সদস্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত থাকবেন, যা এযাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ।
-
দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত ৫৬টি দল এই নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে। তবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ থাকায় আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত আছে, ফলে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। এই পরিস্থিতিতে নিবন্ধিত অন্য দলগুলো এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মাঠে নামবেন।
ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন নিয়ে বিএনপি এবং অন্তর্বর্তী সরকার আগে থেকেই একমত হয়েছিল। তবে এখন এই নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করা এবং জনমনের প্রত্যাশা পূরণ করাই নতুন নির্বাচন কমিশনের (এ এম এম নাসির উদ্দীনের নেতৃত্বে গঠিত) সামনে সবচেয়ে বড় পরীক্ষা।
দেশের মানুষ এখন অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে আগামী নির্বাচনের দিকে, যা বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে এক নতুন বাঁক হিসেবে বিবেচিত হতে চলেছে।
