লিভারপুলে কি আর মন টিকছে না সালাহর?
মোঃ মাহাবুবুর রহমান রাব্বি
প্রকাশিত : ১১:১৮ এএম, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫ বৃহস্পতিবার
ফুটবল মানেই আবেগের ঢেউ, আর এই মুহূর্তে সেই ঢেউ আছড়ে পড়েছে লিভারপুলের কিংবদন্তি মোহামেদ সালাহর জীবনে। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে একটি চাপা গুঞ্জন—অ্যানফিল্ডের রাজা নাকি এখন সেখানে 'অসুখী'। আর এই সুযোগটিই কাজে লাগাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে সৌদি আরবের ধনকুবের ক্লাবগুলো। মোহামেদ সালাহ কি তবে ইউরোপের আলো ঝলমলে মঞ্চ ছেড়ে পাড়ি জমাবেন মধ্যপ্রাচ্যের মরুভূমিতে? প্রশ্নটা এখন কোটি টাকার।
দীর্ঘদিন ধরেই মোহামেদ সালাহ লিভারপুলের আক্রমণভাগের প্রধান ভরসা। তাঁর বাঁ পায়ের জাদু, দ্রুত গতি আর গোল করার নেশা—সব মিলিয়ে তিনি শুধু লিভারপুলের তারকা নন, তিনি ভক্তদের হৃদয়ের মূর্ত প্রতীক। কিন্তু সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা এবং ক্লাব ব্যবস্থাপনার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে ওঠা গুঞ্জন বলছে, ভেতরে ভেতরে কোথাও একটা ছন্দপতন হয়েছে। কেন সালাহ এই ঐতিহাসিক ক্লাবে নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট নন, সেই কারণটা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে এই অসন্তোষের খবরটা যেন আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়েছে সৌদি প্রো লিগের ক্লাবগুলোর কানে।
রেকর্ড ভাঙা প্রস্তাবের হাতছানি
সৌদি আরবের ক্লাবগুলো তাদের লিগকে বিশ্বমানের করার জন্য এখন যেন টাকার বস্তা নিয়ে মাঠে নেমেছে। নেইমার, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পর তাদের পরবর্তী প্রধান লক্ষ্য মোহামেদ সালাহ। একজন আরব আইকন হিসেবে সালাহর মধ্যপ্রাচ্যে যে আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা, তাকে পুঁজি করতে চাইছে তারা।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যাচ্ছে, সালাহকে দলে টানতে সৌদি ক্লাবগুলো অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে বিশাল অঙ্কের ট্রান্সফার ফি দিতে প্রস্তুত। শুধু লিভারপুলকে নয়, সালাহকেও দেওয়া হতে পারে এমন আকাশচুম্বী পারিশ্রমিক, যা ইউরোপের কোনো ক্লাবের পক্ষেই দেওয়া সম্ভব নয়। এই বিশাল অঙ্কের হাতছানি কোনো খেলোয়াড়ের পক্ষে উপেক্ষা করা কঠিন।
লিভারপুলের জন্য আবেগের পরীক্ষা
সালাহর এই গুঞ্জন লিভারপুল ভক্তদের হৃদয়ে বড় ধাক্কা দিয়েছে। ভক্তরা চান না তাঁদের প্রিয় 'মিশরীয় রাজা' ক্লাব ছেড়ে চলে যান। কিন্তু ফুটবলের বাণিজ্যিকীকরণের যুগে আবেগ এবং অর্থের লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত জয়ী হয় কোনটি, সেটাই এখন দেখার বিষয়। ক্লাব কি তার তারকা খেলোয়াড়কে ধরে রাখার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে, নাকি বিপুল অর্থের কাছে নতি স্বীকার করে তাকে ছেড়ে দেবে—লিভারপুলের জন্য এটি এখন এক কঠিন আবেগের পরীক্ষা।
ফুটবল বিশ্লেষকরা বলছেন, সালাহর এই সিদ্ধান্ত কেবল একটি ট্রান্সফার নয়। এটি মধ্যপ্রাচ্যের ফুটবলের জন্য একটি কৌশলগত জয় এবং ইউরোপীয় ফুটবলের জন্য আরও একটি বড় তারকা হারানোর শঙ্কা।
এখন শুধু অপেক্ষার পালা, মোহামেদ সালাহ তাঁর হৃদয়ের কথা শোনেন নাকি টাকার ঝলকানি তাঁকে নতুন পথে নিয়ে যায়।
