ফিনল্যান্ডের স্বাধীনতা দিবস: বরফের দেশে স্বাধীনতার উষ্ণতা
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত : ০৯:৪১ এএম, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫ শনিবার
ডিসেম্বরের কনকনে শীতে যখন পুরো উত্তর ইউরোপ বরফে ঢাকা, ঠিক সেই দিনটি—আজ ৬ ডিসেম্বর—স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশ ফিনল্যান্ডের স্বাধীনতা দিবস। আজকের এই দিনে, ১৯১৭ সালে ফিনল্যান্ড তৎকালীন পরাশক্তি রুশ সাম্রাজ্যের শাসন থেকে মুক্ত হয়ে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল। আজ তাদের স্বাধীনতার ১০৮ বছর পূর্তি।
ফিনল্যান্ডের এই স্বাধীনতা কেবল একটি তারিখ নয়, এটি চরম প্রতিকূলতার মধ্যেও হার না মানার মানসিকতা—যা ফিনিশীয়দের ভাষায় পরিচিত ‘সিসু’ (Sisu) নামে।
ফিনল্যান্ডের স্বাধীনতা অর্জনের পথ সহজ ছিল না। শত শত বছর ধরে দেশটি কখনো সুইডেন, আবার কখনো রাশিয়ার শাসনাধীন ছিল।
-
সুযোগ গ্রহণ: প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ডামাডোল এবং রাশিয়ায় বলশেভিক বিপ্লবের অস্থিরতা কাজে লাগিয়ে ফিনল্যান্ড স্বাধীনতার ডাক দেয়।
-
অস্তিত্বের লড়াই: স্বাধীনতা ঘোষণার পর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পরাশক্তি সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে তাদের অস্তিত্ব রক্ষার যে অসম লড়াই, তা ‘উইন্টার ওয়ার’ নামে পরিচিত। এই যুদ্ধই বিশ্বকে তাদের অদম্য সাহস দেখিয়েছিল।
ফিনল্যান্ডের স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপনের রীতিটি অত্যন্ত ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ এবং অনন্য।
-
দুই মোমবাতি: ফিনিশরা এই দিনে তাদের জানালার পাশে দুটি মোমবাতি জ্বালায়—একটি নীল, অন্যটি সাদা। ঊনবিংশ শতাব্দীতে রাশিয়ার জবরদস্তিমূলক শাসনের বিরুদ্ধে এটি ছিল নীরব প্রতিবাদের ভাষা এবং স্বাধীনতাকামী যোদ্ধাদের নিরাপদ আশ্রয়ের সংকেত। এই দুটি মোমবাতি আজও আশা ও স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
-
জাতীয় উদ্যাপন: দিনটিতে রাজধানী হেলসিঙ্কিতে মশালমিছিল হয়, যুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয় এবং রাষ্ট্রপতি ভবনে জাঁকজমকপূর্ণ সংবর্ধনা বা ‘ক্যাসল বল’ অনুষ্ঠিত হয়।
আজকের ফিনল্যান্ড বিশ্বের অন্যতম সুখী ও শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে পরিচিত, যার ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল শত বছর আগের এই ডিসেম্বরেই।
