ঈশ্বরদীর শোকের অবসান!নতুন চারটি ছানা পেয়ে স্বাভাবিক হলো মা কুকুর
তরুন কণ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ০৫:৪৩ পিএম, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫ বৃহস্পতিবার
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় আটটি ছানাকে নৃশংসভাবে বস্তাবন্দী করে হত্যার পর যে মা কুকুরটি শোকে এদিক-সেদিক আহাজারি করছিল এবং ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ছিল, সে এখন স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ঈশ্বরদিয়ান’-এর মানবিক উদ্যোগে অন্য স্থান থেকে এনে মা কুকুরটির কাছে মোট চারটি ছানা দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে গিয়ে দেখা যায়, মা কুকুরটি কেবল ছানাগুলোকে দুধ পান করাচ্ছে না, সে নিজেও খাচ্ছে এবং ছানাদের নিয়ে খেলায় ব্যস্ত। তার এই সুস্থতা দেখে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন স্থানীয় প্রশাসন ও পশুপ্রেমীরা।
‘ঈশ্বরদিয়ান’ নামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির মুখপাত্র শাহরিয়ার অমিত জানান, আটটি ছানা হত্যার পর মা কুকুরটির আর্তনাদ দেখে তাঁরা কষ্ট পান। কুকুরটিকে শান্ত করার জন্য তাঁরা একটি উপায় খুঁজতে থাকেন।
-
প্রথম উদ্যোগ: গত বুধবার শাহরিয়ার অমিতের বাড়ির পাশের একটি পোষা কুকুরের কাছ থেকে দুটি ছানা এনে ছানা হারানো কুকুরটিকে দেওয়া হয়।
-
দ্বিতীয় উদ্যোগ: আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনিরুজ্জামান-এর উপস্থিতিতে আরও দুটি অনাথ ছানা এই কুকুরটির কাছে রাখা হয়, যাদের মা মারা গিয়েছিল।
নতুন ছানাদের মা কুকুরটির কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য একটি বিশেষ কৌশল অবলম্বন করা হয়েছিল। শাহরিয়ার অমিত বলেন, প্রথমে মা কুকুরটির বুক থেকে কিছু দুধ সংগ্রহ করে নতুন ছানা দুটিকে খাওয়ানো হয়। এতে নতুন ছানাদের শরীরে ওই মায়ের গন্ধ লেগে যায়। এরপর মা কুকুরটি সাদরেই ছানাগুলোকে গ্রহণ করে নেয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনিরুজ্জামান এই মানবিক উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, "আট ছানা হারানোর পর কুকুরটির কান্না থামানো যাচ্ছিল না। নতুন করে ছানা পাওয়ার পর মা কুকুরটি বেশ ভালো আছে। আমরা নিয়মিত কুকুরগুলোর খোঁজখবর নিচ্ছি।"
উল্লেখ্য, গত সোমবার ঈশ্বরদী উপজেলায় ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসানুর রহমানের স্ত্রী নিশি রহমানের বিরুদ্ধে কুকুর ছানাগুলোকে হত্যার অভিযোগ ওঠে। মঙ্গলবার রাতে পশুসম্পদ কর্মকর্তা বাদী হয়ে নিশি রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন এবং ওই রাতেই পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। বুধবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
