বুধবার   ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫   অগ্রাহায়ণ ১৯ ১৪৩২   ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

রাজনৈতিক আশ্রয়ে থেকে নিজ দেশে ভ্রমণ?

নাজমুল হুদা

প্রকাশিত : ১০:২৮ এএম, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ বুধবার

যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় (Asylum) বা শরণার্থী মর্যাদা (Refugee Status) পাওয়ার পর নিজ দেশে ভ্রমণ করা নিয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে ব্রিটিশ হোম অফিস। অভিবাসন আইনজীবীরা সতর্ক করে বলছেন, এই ধরনের ভ্রমণ কেবল ঝুঁকিপূর্ণই নয়, এর ফলে আপনার অর্জিত শরণার্থী মর্যাদা এবং যুক্তরাজ্যে বসবাসের অধিকার চিরতরে বাতিল হতে পারে।

 

১৯৫১ সালের রিফিউজি কনভেনশন এবং যুক্তরাজ্যের ইমিগ্রেশন রুলস অনুযায়ী, রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার মূল ভিত্তি হলো নিজ দেশে ফেরত গেলে 'নির্যাতনের সুপ্রতিষ্ঠিত ভয়' (Well-founded fear of persecution)।

 

 

যুক্তরাজ্যের অভিবাসন আইন অনুযায়ী, যদি কোনো ব্যক্তি রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার পর স্বেচ্ছায় তাঁর নিজ দেশে ভ্রমণ করেন, তবে হোম অফিস ধরে নেয় যে: ১. তাঁর জীবনের আর কোনো ঝুঁকি নেই। ২. তিনি স্বেচ্ছায় নিজ দেশের সুরক্ষা গ্রহণ করেছেন। ৩. আশ্রয়ের সময় তিনি যে ভয়ের কারণ দেখিয়েছিলেন, তা আর বিদ্যমান নেই বা ভুয়া ছিল।

 

আইনজীবীরা জানান, প্যারাগ্রাফ ৩৩৯এ (Paragraph 339A of the Immigration Rules) অনুযায়ী, নিজ দেশে ভ্রমণের প্রমাণ পাওয়া গেলে হোম অফিস যেকোনো সময় শরণার্থী মর্যাদা প্রত্যাহার (Revoke) করতে পারে।

 

 

রাজনৈতিক আশ্রয়প্রাপ্তদের সাধারণত 'কনভেনশন ট্রাভেল ডকুমেন্ট' দেওয়া হয়, যেখানে স্পষ্ট লেখা থাকে যে ওই নির্দিষ্ট দেশটিতে ভ্রমণ করা যাবে না। কিন্তু অনেকে গোপনে নিজ দেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করে বা তৃতীয় কোনো দেশ হয়ে নিজ দেশে প্রবেশের চেষ্টা করেন।

 

যুক্তরাজ্যের বর্ডার ফোর্স বর্তমানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে যাত্রীদের ভ্রমণের ইতিহাস যাচাই করছে। যুক্তরাজ্যে ফিরে আসার সময় যদি পাসপোর্টে নিজ দেশের সিল বা ভ্রমণের প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে বিমানবন্দর থেকেই তাকে আটকের ক্ষমতা রাখে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা। এমনকি 'ইনডেফিনিট লিভ টু রিমেইন' (ILR) থাকার পরেও তা বাতিল হতে পারে।

 

অত্যন্ত জরুরি মানবিক কারণে (যেমন পরিবারের খুব কাছের সদস্যের মৃত্যু বা মৃত্যুশয্যা) ভ্রমণের প্রয়োজন হলে হোম অফিসের কাছে আগে থেকে অনুমতি চাওয়ার সুযোগ আছে। তবে এটি অত্যন্ত জটিল প্রক্রিয়া এবং অনুমতি মিলবে এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। আইনজীবীদের পরামর্শ, হোম অফিসের লিখিত অনুমতি ছাড়া কোনোভাবেই নিজ দেশে ভ্রমণ করা উচিত নয়।