তিতুমীরে সাংবাদিকদের ওপর হামলায় ছাত্রদলের উদাসীনতা
সাদিকুল ইসলাম সাদিক, তিতুমীর কলেজ প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১২:৪৩ এএম, ২ ডিসেম্বর ২০২৫ মঙ্গলবার
সরকারি তিতুমীর কলেজে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদ গঠিত তদন্ত কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার চার দিন পেড়িয়ে গেলেও এখনো অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়নি কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।
গত (২২ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১১ টার দিকে কলেজের প্রধান ফটকের সামনে ছাত্রদল -ছাত্রশিবিরের সংঘর্ষের সময় সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাংবাদিক তাওসিফ মাইমুন, দ্যা ডেইলি ক্যাম্পােসের কলেজ প্রতিনিধি মো. আল আমিন এবং সহযোগী সদস্য দৈনিক তরুণ কণ্ঠের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি সাদিকুল ইসলামের ওপর হামলা চালায় তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
ঘটনার পরদিন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি নিজাম উদ্দিন ও মাসুদ রানা রিয়াজকে নিয়ে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে ৪৮ ঘণ্টায় রিপোর্ট দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
হামলার পর সাংবাদিক তাওসিফ মাইমুন তদন্ত কমিটির নিকট একটি লিখিত অভিযোগ জমা দেন। তিনি অভিযোগ করেন, শহীদ মামুন ছাত্রাবাসের কয়েকজন ছাত্রদল কর্মী তাঁর ওপর তিন দফায় হামলা চালায় এবং তাঁর মানিব্যাগ, ইয়ারফোন ও প্রায় ৯ হাজার ৮০০ টাকা নিয়ে যায়। সাংবাদিক সমিতির সদস্য সাদিক আল আমিনকেও মারধর করা হয়।
অন্যদিকে, ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তদন্ত কমিটির কাছে অভিযোগ করেন যে সাংবাদিক সমিতির কিছু সদস্য শিবিরের হয়ে কাজ করেন। তবে সাংবাদিক সমিতি এই অভিযোগকে 'মিথ্যা ও ভিত্তিহীন' বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।
তদন্ত কমিটি কলেজের শিক্ষার্থী, ছাত্রদলের নেতাকর্মী, সাংবাদিক সমিতি, আহত সাংবাদিক ও অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলে। ২৭ নভেম্বর চার দফা সুপারিশ করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।
চার দফা সুপারিশ হলো- অভিযুক্তদের জবাবদিহির আওতায় আনা, অধ্যক্ষকে মধ্যস্থতায় উদ্যোগী ভূমিকা নেওয়া, সাংবাদিকদের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় রাখা এবং দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা।
তবে এসব সুপারিশ জমা পড়লেও এখনো পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ছাত্রদল কোনো শাস্তিমূলক বা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়নি। এতে তদন্ত প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
আহত সাংবাদিক তাওসিফ মামুন অভিযোগ করে বলেন , “তদন্ত কমিটি কাজ করেছে, আমরা বক্তব্য দিয়েছি। কিন্তু এখনও কেউ শাস্তি পায়নি। এতে মনে হচ্ছে, বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে।”
এই বিষয়ে মন্তব্য জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও তদন্ত কমিটির প্রধান ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মো. নিজাম উদ্দিন ফোন ধরেননি। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. রাকিবের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠানো হলেও কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।
