সোমবার   ০১ ডিসেম্বর ২০২৫   অগ্রাহায়ণ ১৬ ১৪৩২   ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

বিডিআর হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ আওয়ামী লীগ?

তরুন কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত : ০৯:৪৩ এএম, ১ ডিসেম্বর ২০২৫ সোমবার

পিলখানায় ২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহে ঘটে যাওয়া নৃশংস হত্যাকাণ্ডে দলগতভাবে আওয়ামী লীগের জড়িততা পেয়েছে জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন। কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই ঘটনার মূল সমন্বয়ক ছিলেন তৎকালীন সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নূর তাপস। পুরো ঘটনায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘গ্রিন সিগন্যাল’ ছিল। এ ছাড়া ভারতেরও সম্পৃক্ততা পেয়েছে কমিশন।

 

রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছে কমিশন। পরে সায়েন্স ল্যাবরেটরির বিআরআইসিএম ভবনে সংবাদ সম্মেলনে কমিশনপ্রধান মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান এসব তথ্য তুলে ধরেন।

 

কমিশন বলছে, সেনাবাহিনীকে দুর্বল করতে এবং ক্ষমতা ধরে রাখতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। তৎকালীন সরকার এবং প্রতিবেশী দেশ ভারত এতে জড়িত। রিপোর্টে নাম উঠেছে শেখ হাসিনা, শেখ ফজলে নূর তাপস, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মির্জা আজম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাহারা খাতুন, তারিক আহমেদ সিদ্দিক, জেনারেল মইন ইউ আহমেদ এবং মোল্লা ফজলে আকবরের।

 

ফজলুর রহমান বলেন, “ঘটনাটি পরিকল্পিত। তাপস মসজিদে এবং বিভিন্ন ট্রেনিং গ্রাউন্ডে মিটিং করে ষড়যন্ত্র দানা বেঁধেছে। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ এবং ছাত্রলীগের লোকেরা পিলখানায় ঢুকে হত্যাকারীদের সাহায্য করেছে। মিছিল করে ঢুকে বের হওয়ার সময় অনেক কিলারকে লুকিয়ে বের করেছে।”

 

ভারতের সম্পৃক্ততা নিয়ে কমিশন জানায়, ঘটনার সময় ৯২১ জন ভারতীয় বাংলাদেশে এসেছিল, যার মধ্যে ৬৭ জনের হদিস নেই। কমিশন সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে – ভারতের কাছে এই ব্যক্তিদের বিষয়ে জানতে চাওয়া।

 

কমিশনের সুপারিশে আছে – ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে প্রশাসন ও বাহিনীতে সংস্কার। ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “জাতি দীর্ঘদিন অন্ধকারে ছিল। এই রিপোর্ট সত্য উদ্ঘাটন করেছে। জাতির জন্য মূল্যবান সম্পদ।”

 

কমিশনের সদস্যরা হলেন মেজর জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. সাইদুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব মুন্সী আলাউদ্দিন আল আজাদ, অবসরপ্রাপ্ত ডিআইজি এম আকবর আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান অধ্যাপক মো. শরীফুল ইসলাম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মো. শাহনেওয়াজ খান চন্দন।

 

২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় এই হত্যাকাণ্ডে মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। সব মিলিয়ে ৭৪ জনের মৃত্যু হয়। কমিশন বলছে, এটা সেনাবাহিনীকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্র ছিল।