বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থায় তিন দিনের তুলনায় সামান্য উন্নতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। প্রায় তিন দিন অচেতনসদৃশ অবস্থায় থাকার পর শনিবার সকালে সিসিইউতে শয্যার পাশে থাকা পুত্রবধূ শামিলা রহমানের সঙ্গে তিনি কিছু কথা বলেন। চিকিৎসকেরা এটিকে ইতিবাচক সংকেত হিসেবে দেখছেন।

 

তবে সামগ্রিকভাবে তাঁর অবস্থাকে এখনো গুরুতর বলেই ধরে রাখা হয়েছে। বিশেষত কিডনির কার্যকারিতা তীব্রভাবে কমে যাওয়ায় তাঁকে টানা চার দিন ডায়ালাইসিস করতে হয়েছে। ফুসফুসে অতিরিক্ত পানি জমে শ্বাসকষ্টও বেড়েছে। মেডিকেল বোর্ডের পর্যবেক্ষণ—আগামী কয়েকটি দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

 

বিদেশে নেওয়ার প্রস্তুতি, কিন্তু ঝুঁকি বেশি

 

দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড মনে করছে, উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে বিদেশে নেওয়া প্রয়োজন। লন্ডন ক্লিনিকে নেয়ার পরিকল্পনায় কাজ চলছে; পরিস্থিতি না উন্নত হলে সিঙ্গাপুরও বিকল্প। তবে চিকিৎসকেরা নিশ্চিত করে বলছেন—এ মুহূর্তে বিমানযাত্রার ধকল তিনি সামলাতে পারবেন না।

 

ভিসা, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সসহ সব প্রস্তুতি আগেই এগিয়ে রাখা হচ্ছে যেন সুযোগ এলেই দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়।

 

হাসপাতালের সামনে ভিড়—বিএনপির অনুরোধ

 

খালেদা জিয়ার অসুস্থতার খবরে নেতাকর্মী ও সমর্থকরা প্রতিদিনই এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে ভিড় করছেন। এতে হাসপাতাল এলাকায় যানজট ও চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সবার প্রতি অনুরোধ করেন—

 

“দয়া করে হাসপাতালে ভিড় করবেন না।”

 

তিনি জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভিড়ের কারণে বিব্রত হচ্ছেন এবং অন্যান্য রোগীর চিকিৎসায়ও বিঘ্ন তৈরি হচ্ছে।

 

রাষ্ট্রপতি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের দোয়া কামনা

 

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন দেশবাসীর কাছে খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতার জন্য দোয়া চান। জাতীয় নাগরিক পার্টি, খেলাফত মজলিসসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও হাসপাতালে গিয়ে খোঁজ নিয়েছেন।

 

৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্‌রোগ, ডায়াবেটিস, লিভার সিরোসিস ও কিডনি জটিলতায় ভুগছেন। রোববার রাত থেকে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় এবং টানা কয়েক দিন তিনি সাড়া দিচ্ছিলেন না। শুক্রবার রাত থেকে সামান্য অগ্রগতি দেখা গেলেও সামগ্রিক সংকট এখনো কাটেনি।