ভূমিকম্পে বংশালে রেলিং ধসে বাবা–ছেলের করুণ মৃত্যু
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ০৬:০০ পিএম, ২১ নভেম্বর ২০২৫ শুক্রবার
ছুটির সকালে ছোট ছেলে মেহরাব হোসেন রিমনকে (১২) নিয়ে মাংস কিনতে বের হয়েছিলেন আবদুর রহিম (৪৮)। কিন্তু বাজার থেকে আর ঘরে ফেরা হলো না—রহিম ও তাঁর ছেলে দুজনকেই পরিবারের সদস্যদের লাশ শনাক্ত করতে হলো মর্গে।
শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে রাজধানীর পুরান ঢাকার বংশালের কসাইটুলীতে নয়নের মাংসের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন বাবা–ছেলে। ঠিক সে সময় ঘটে ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্প। তীব্র ঝাঁকুনিতে ভবনের ছাদের রেলিং ভেঙে নিচে থাকা ক্রেতাদের ওপর পড়ে। মুহূর্তেই চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান আবদুর রহিম ও তাঁর ছেলে মেহরাব। একই ঘটনায় নিহত হন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী রাফিউল ইসলাম রাফি। রাফিউলের মা নুসরাত গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
নিহত আবদুর রহিম বিক্রমপুর গার্ডেন সিটিতে ফেব্রিকস ব্যবসা করতেন। তাঁর তিন ছেলে ও এক মেয়ে। ছোট ছেলে মেহরাবকে নিয়ে সুরিটলা স্কুলের পেছনে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি। তাঁদের গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রকোনায়।
দুপুর আড়াইটার দিকে মর্গে পৌঁছে ভাই ও ভাতিজার লাশ শনাক্ত করেন রহিমের ছোট ভাই মো. নাছির এবং মো. মোস্তফা। লাশ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন নাছির। ভগ্নকণ্ঠে বলেন, ‘আমার ভাই খুব ভালো মানুষ ছিল। দুই বছর আগে হজ করে এসেছে। আল্লাহ যেন ভাই ও ভাতিজাকে জান্নাত নসিব করেন।’
নাছির আরও জানান, জুমার নামাজের পর মা ফোন করে উদ্বেগ জানালে তাঁরা খোঁজ শুরু করেন। ভূমিকম্পের পর থেকে ভাই–ভাতিজার ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। পরে মর্গে গিয়েই ভয়ঙ্কর সত্যের মুখোমুখি হতে হয় তাদের।
শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে হওয়া ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদীর মাধবদী। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫.৭, যা মাঝারি হলেও বংশালে ছাদের রেলিং ধসিয়ে তিনজনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।
