মৃত্যুদণ্ডে জাতিসংঘের অসন্তোষ: বাংলাদেশকে সতর্ক বার্তা
মোঃ মোসাদ্দেক হোসাইন ইমন
প্রকাশিত : ০১:১৩ এএম, ১৮ নভেম্বর ২০২৫ মঙ্গলবার
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ডের রায়কে মানবাধিকার ভুক্তভোগীদের জন্য “একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত” হিসেবে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর (ওএইচসিএইচআর)। তবে একই সঙ্গে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়ায় গভীর অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
আজ সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর এক বিবৃতিতে এসব কথা জানান ওএইচসিএইচআরের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি। বিবৃতিটি প্রকাশিত হয়েছে সংস্থাটির সরকারি ওয়েবসাইটে।
তিনি বলেন, “২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে আমাদের তথ্য-অনুসন্ধান প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকেই আমরা নেতৃত্বের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিসহ দায়ীদের আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বান জানিয়ে আসছি। একই সঙ্গে ভুক্তভোগীদের কার্যকর প্রতিকার ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার কথাও বলেছি।”
তবে বিচারপ্রক্রিয়ার বিষয়ে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ হয়েছে কি না—এ বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন তিনি। শামদাসানি বলেন, “এই বিচারপ্রক্রিয়া সম্পর্কে আমরা পূর্বে অবগত ছিলাম না। আমরা ধারাবাহিকভাবে বলে এসেছি যে সব ধরনের জবাবদিহিমূলক কার্যক্রম, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক অপরাধের অভিযোগ, প্রশ্নাতীতভাবে ন্যায়বিচারের ন্যূনতম আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পূরণ করতে হবে। এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ যখন বিচার হয়েছে অভিযুক্তের অনুপস্থিতিতে এবং সেখানে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়া হয়েছে।”
মৃত্যুদণ্ডের বিষয়ে স্পষ্ট অসন্তোষ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, “আমরা সব পরিস্থিতিতেই মৃত্যুদণ্ডের বিরোধিতা করি। এ রায়ের জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি।”
এদিকে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক আশা প্রকাশ করেছেন যে বাংলাদেশ সত্য উন্মোচন, ক্ষতিপূরণ ও ন্যায়বিচারের সমন্বিত প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে জাতীয় ঐক্য ও সুস্থতার দিকে এগিয়ে যাবে। তিনি বলেন, এ পথে নিরাপত্তা খাতের রূপান্তরমূলক সংস্কার অত্যন্ত জরুরি, যাতে ভবিষ্যতে আর মানবাধিকার লঙ্ঘন বা নিপীড়নের ঘটনা না ঘটে। এসব প্রয়াসে বাংলাদেশকে সহায়তা দিতে প্রস্তুত ওএইচসিএইচআর।
