বিএনপি ও জোট নেতাদের প্রতীক্ষার অবসান এ মাসেই
তরুন কণ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ১০:২৬ এএম, ১৬ নভেম্বর ২০২৫ রোববার
ফাঁকা ৬৩ আসনে মনোনয়ন চূড়ান্ত হচ্ছে
চলতি নভেম্বর মাসের মধ্যেই অঘোষিত ৬৩টি আসনে মনোনয়ন চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই এসব আসনে দল ও জোটের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।
এ বিষয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে বিএনপি। শিগগিরই জোটের প্রধান ও শরিকদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠকে বসবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সমঝোতার ভিত্তিতে ফাঁকা আসনগুলোতে বিএনপি ও জোটের প্রার্থী একই সঙ্গে বা ধাপে ধাপে ঘোষণা করা হতে পারে।
এদিকে ইতোমধ্যে ঘোষিত প্রার্থী তালিকার কয়েকটি আসনে যে বিরোধ তৈরি হয়েছে, তা নিরসনে কাজ করছে দলটি। কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় স্থানীয় পর্যায়ের নেতারা সমঝোতার উদ্যোগ নিয়েছেন।
তারপরও সমাধান না হলে সংশ্লিষ্ট আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ঢাকায় ডেকে এনে সমঝোতা করাচ্ছে কেন্দ্র। গত শুক্রবার কুমিল্লা–৯ আসনে মনোনীত প্রার্থী আবুল কালাম ও মনোনয়নপ্রত্যাশী সামিরা আজিম দোলার মধ্যে বিরোধ মিটিয়ে দিয়েছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। বিএনপির প্রত্যাশা, শিগগিরই বাকি আসনগুলোর সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। প্রয়োজনে সীমিতসংখ্যক আসনে পরিবর্তন আসতে পারে।
৩ নভেম্বর বিএনপি ২৩৭ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করে। বাকি ৬৩ আসন ফাঁকা রাখা হয়। পরে মাদারীপুর–১ আসনে প্রার্থী কামাল জামান মোল্লার মনোনয়ন স্থগিত করা হয়।
দলীয় সূত্র জানায়, ফাঁকা আসনগুলো নিয়ে দলটি বেশ কিছুদিন ধরে কাজ করছে এবং শরিকদের তালিকা থেকে বাস্তবতার ভিত্তিতে একটি শর্টলিস্ট করেছে বিএনপি। মাঠপর্যায়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের সম্পর্কে খোঁজখবরও নেওয়া হয়েছে।
বিশেষ করে কে কতটা জনপ্রিয় এবং বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা কতটা—এসব বিষয় বিবেচনায় রাখা হচ্ছে। সংশোধিত আরপিও অনুযায়ী জোট শরিকরা নিজেদের প্রতীকেই ভোট করবে—এ বিষয়টি বিএনপির জন্য বড় বিবেচ্য হয়ে উঠেছে।
শরিকদের নিয়ে আসন–বণ্টন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গত বুধবার জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট এবং শুক্রবার ১২–দলীয় জোটের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেন নজরুল ইসলাম খান। নিবন্ধনবিহীন এই দুটি জোট দ্রুত মনোনয়ন চূড়ান্ত করার অনুরোধ জানায়। বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, শিগগিরই তারেক রহমান শরিকদের সঙ্গে যুগপৎ মনোনয়ন বিষয়ে ভার্চুয়ালি আলোচনা করবেন। সংশোধিত আরপিওর জটিলতার বিষয়টিও মিত্রদের সামনে তুলে ধরা হয়।
স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আগামী নির্বাচনে শরিকদের যে আসন বিএনপি ছাড়বে, তার বিষয়ে আলাপ–আলোচনা প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে। আর আরপিও সংশোধন না হলে নিবন্ধিত শরিকদের নিজেদের প্রতীকেই ভোট করতে হবে। তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে ঘোষিত আসনগুলোর যেসব জায়গায় সমস্যা, সেখানে সমঝোতার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি যেসব আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত হয়নি, সেগুলোও দ্রুত ঘোষণা করা হবে। আশা করা হচ্ছে, নভেম্বরের মধ্যেই সব মনোনয়ন চূড়ান্ত হবে।
জামায়াত ছাড়া ইসলামী ও বামপন্থি কয়েকটি দলকে নিয়ে বৃহত্তর নির্বাচনী জোট গঠনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে বিএনপি। নতুন আরপিও অনুযায়ী এসব নিবন্ধিত দল নিজেদের প্রতীকেই নির্বাচন করবে। অন্তর্বর্তী সরকার গত ৪ নভেম্বর আরপিও সংশোধন গেজেট প্রকাশ করেছে।
বিএনপি সর্বশেষ ২০১৮ সালের নির্বাচনে শরিকদের জন্য ৫৯টি আসন ছেড়েছিল। এবার ২৫ থেকে ৩০টি আসন ছাড়ার চিন্তা করছে দলটি। তবে গত নির্বাচনের তুলনায় এবার জামায়াতকে বিএনপির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, ফলে আসন বণ্টনে নতুন সমীকরণ তৈরি হয়েছে। বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বিবেচনায় এনে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় শরিকদের জন্য আসন ছেড়ে দেবে বিএনপি। জোটটি কত বড় হবে, তার ওপর নির্ভর করবে মোট আসন ছাড়ের সংখ্যা।
