বৃহস্পতিবার   ০৬ নভেম্বর ২০২৫   কার্তিক ২২ ১৪৩২   ১৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

জুলাই সনদ নিয়ে সমঝোতার উদ্যোগ, বিএনপি এখনো নীরব

প্রকাশিত : ১১:৩৪ এএম, ৬ নভেম্বর ২০২৫ বৃহস্পতিবার

জুলাই সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি ও গণভোটের সময়সূচি নিয়ে রাজনৈতিক সমঝোতার উদ্যোগ নিয়েছে এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদ, এবি পার্টি এবং গণতন্ত্র মঞ্চভুক্ত আরও ছয়টি দল। বুধবার রাজধানীর পল্টনে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কার্যালয়ে এই নয় দলের জরুরি বৈঠকে শুধু সনদ নয়, সম্ভাব্য জোট গঠনের বিষয়েও আলোচনা হয়। তবে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছায়নি দলগুলো।

 

বৈঠক শেষে নেতারা জানান, সনদ ইস্যুতে সৃষ্ট অচলাবস্থা নিরসনে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী সঙ্গে আলোচনা করার পরিকল্পনা রয়েছে। ইতোমধ্যে জামায়াত এই আলোচনার জন্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের ও হামিদুর রহমান আযাদকে নিয়ে একটি কমিটি করেছে। তবে বিএনপি এ বিষয়ে এখনো কোনো অবস্থান জানায়নি।

 

জামায়াত আগেই জুলাই সনদ ও গণভোটের সময় নিয়ে বিএনপিকে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছিল। সরকারের পক্ষ থেকেও রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যমত্যে পৌঁছানোর আহ্বান জানানো হয় এবং এক সপ্তাহের সময় দেওয়া হয়। তবে এখন পর্যন্ত বিএনপি আলোচনায় বসার ইঙ্গিত দেয়নি।

 

বিএনপি নির্বাচনের দিনই ‘নোট অব ডিসেন্ট’সহ গণভোট চায়, আর জামায়াত চায় নভেম্বরে নোটমুক্ত গণভোট। এই মতবিরোধ নিরসনে জামায়াত সরকারের মধ্যস্থতা চাইলেও সরকার জানায়, রাজনৈতিক দলগুলোকেই আলোচনার মাধ্যমে সমাধান বের করতে হবে।

 

এর আগে সেপ্টেম্বরেও নয় দল জুলাই সনদ নিয়ে ঐকমত্যের চেষ্টা করেছিল, কিন্তু বিএনপি তার অবস্থান থেকে সরে না আসায় আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি।

 

বুধবারের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইয়ুম, এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, মুখপাত্র ফারুক হাসান, গণসংহতির জোনায়েদ সাকি, নাগরিক ঐক্যের শহিদুল্লাহ কায়সার, জেএসডির তানিয়া রব, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু প্রমুখ।

 

হাসনাত কাইয়ুম বলেন, “সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐকমত্যে পৌঁছানোর সুযোগ দিয়েছে। আমরা সেই লক্ষ্যেই আলোচনা করছি। কিছু বিষয়ে অগ্রগতি হয়েছে, বাকি দলগুলোর সঙ্গেও আলোচনা করব।”

 

রাশেদ খান বলেন, “নির্বাচন সামনে রেখে বিভাজনের রাজনীতি বেড়েছে। ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের আগে সব দলকে নিয়ে ঐক্যমত্যের চেষ্টা চলছে।”

 

অন্যদিকে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, “আমাদের মূল লক্ষ্য সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা। এজন্য বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে আলোচনায় যেতে হবে— সবাইকে কিছু না কিছু ছাড় দিতে হবে।”

 

বৈঠকে জোট গঠন নিয়েও আলোচনা হয়। নয় দল সূত্রে জানা গেছে, নেতৃত্ব ও প্রতীক ব্যবহারের বিষয়ে মতভেদ থাকায় এখনো ঐক্য গঠন হয়নি। তবে যৌথ নেতৃত্বে জোট গঠনের সম্ভাবনা নিয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে।

 

বৈঠকের মুখপাত্র ফারুক হাসান বলেন, “বিএনপি-জামায়াতের বাইরে তৃতীয় শক্তি হিসেবে নতুন জোট গঠনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। জনগণও নতুন রাজনৈতিক বিকল্প চায়।”

 

এনসিপির আখতার হোসেন বলেন, “সব রাজনৈতিক দলকেই আলোচনায় আসতে হবে। সংকট নিরসনে সরকারকেও সাহসী ভূমিকা নিতে হবে।”