রোববার   ০২ নভেম্বর ২০২৫   কার্তিক ১৭ ১৪৩২   ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

৫২ বছরে ঐশ্বরিয়া রাই: সময়কেও হার মানানো সৌন্দর্য

বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশিত : ০৪:১৬ পিএম, ১ নভেম্বর ২০২৫ শনিবার

বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও সাবেক বিশ্বসুন্দরী ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন আজ ৫১ পেরিয়ে ৫২-তে পা দিলেন। কিন্তু বয়স তার সৌন্দর্যের দীপ্তিকে একটুও কমাতে পারেনি। অনন্য রূপ, মাধুর্য ও আত্মবিশ্বাসে তিনি এখনও নব্বই দশকের সেই ঐশ্বরিয়া—সময়ের কাছে অপরাজিত।

 

১৯৯৭ সালে তামিল নির্মাতা মণিরত্নমের ‘ইরুভার’ সিনেমার মাধ্যমে বড়পর্দায় অভিষেক হয় ঐশ্বরিয়ার। একই বছর বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেন ‘ওর পেয়ার হো গয়া’ ছবির মাধ্যমে। তবে ১৯৯৯ সালের ‘হাম দিল দে চুকে সনম’ তার ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। এরপর ‘তাল’, ‘দেবদাস’, ‘জোধা আকবর’, ‘গুরু’, ‘ধূম ২’, ‘রেইনকোট’সহ অসংখ্য চলচ্চিত্রে অভিনয়ের নৈপুণ্যে তিনি প্রমাণ করেছেন, তিনি কেবল সৌন্দর্যের নয়, প্রতিভারও প্রতীক। বিশেষ করে ‘দেবদাস’-এ পারো চরিত্রে তার অনবদ্য অভিনয় আজও দর্শকদের হৃদয়ে জায়গা করে আছে।

 

ঐশ্বরিয়া বলিউডের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও ছাপ রেখেছেন। ‘ব্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস’ ও ‘দ্য পিঙ্ক প্যান্থার ২’-এর মতো হলিউড প্রজেক্টে কাজ করেছেন তিনি। পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে কান চলচ্চিত্র উৎসবে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করছেন তিনি—যার রেড কার্পেট উপস্থিতি এখন এক ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে।

 

তিনি লরিয়েল প্যারিসের গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর হিসেবেও পরিচিত এবং মানবিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয়। তার প্রতিষ্ঠিত ‘ঐশ্বরিয়া রাই ফাউন্ডেশন’ দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ও অসহায় শিশুদের সহায়তায় কাজ করছে দীর্ঘদিন ধরে।

 

কর্নাটকের মঙ্গলুরুতে জন্ম নেওয়া ঐশ্বরিয়ার শৈশবের স্বপ্ন ছিল স্থপতি হওয়া, তবে ভাগ্যের লিখনে তিনি হয়েছেন বিশ্বসুন্দরী। নব্বই দশকের শুরুতে বিজ্ঞাপনচিত্র ও মডেলিং দিয়ে যাত্রা শুরু করেন, এরপর ১৯৯৪ সালে মিস ওয়ার্ল্ড খেতাব জয় করে রাতারাতি আলোচনায় আসেন।

 

২০০৭ সালে তিনি বিয়ে করেন বলিউড তারকা অভিষেক বচ্চনকে। অমিতাভ বচ্চনের পরিবারের পুত্রবধূ হিসেবে যোগ দেন বলিউডের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ পরিবারে। ২০১১ সালে জন্ম নেয় তাদের কন্যা আরাধ্যা বচ্চন।

 

মাতৃত্বের পর কিছু সময় বিরতি নিলেও ঐশ্বরিয়া ফিরে আসেন আরও উজ্জ্বলভাবে। ‘জজবা’, ‘সর্বজিত’, ‘অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল’ এবং সাম্প্রতিক ‘পোন্নিয়িন সেলভান’ সিরিজে তার পর্দা-উপস্থিতি আবারও প্রমাণ করেছে, অভিনয়ে তিনি আগের মতোই অনবদ্য।

 

ঐশ্বরিয়া রাই শুধু রূপের নয়, আত্মবিশ্বাস ও মানবিকতার প্রতীক। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, “সৌন্দর্য মানে নিখুঁত হওয়া নয়, বরং নিজের অসম্পূর্ণতাকেও ভালোবাসা।” সেই দর্শনই তাকে আজও করে রেখেছে অনন্য, অনুপ্রেরণার প্রতিমূর্তি।