মঙ্গলবার   ২১ অক্টোবর ২০২৫   কার্তিক ৫ ১৪৩২   ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৭

পরপর অগ্নিকাণ্ডে নাশকতার সন্দেহ, স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান

তরুণ কণ্ঠ রিপোর্ট

প্রকাশিত : ১০:৩২ এএম, ১৯ অক্টোবর ২০২৫ রোববার

রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের দুদিন আগেই চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলে (সিইপিজেড) পুড়ে যায় একটি পোশাক কারখানা ভবন। দেশের দুটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় পরপর আগুন লাগায় ঘটনাগুলোর পেছনে **নাশকতার আশঙ্কা** প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

ফায়ার সার্ভিসের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) **আলী আহম্মেদ খান** বলেন, বিমানবন্দর একটি কেপিআইভুক্ত এলাকা, যেখানে সার্বক্ষণিক নজরদারি থাকার কথা। সেখানে আগুন লাগলেও এত সময় ধরে জ্বলা অস্বাভাবিক। “এত শক্তিশালী ইউনিট থাকা সত্ত্বেও আগুন নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘ সময় লাগা কর্তৃপক্ষের গাফিলতির ইঙ্গিত দেয়,” বলেন তিনি।

তিনি মনে করেন, এসব অগ্নিকাণ্ড দ্রুত তদন্ত করে কারণ ও দায়ীদের শনাক্ত করা জরুরি। কারণ এটি দেশের ভাবমূর্তি ও অর্থনীতির জন্য বড় হুমকি হতে পারে।

অন্যদিকে ফায়ার সার্ভিসের আরেক সাবেক ডিজি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) **আবু নাঈম মো. শহিদউল্লাহ** বলেন, ঘন ঘন আগুন লাগার ঘটনায় নাশকতার আলামত থাকতে পারে। “দুর্ঘটনার আড়ালে কোনো ষড়যন্ত্র লুকিয়ে থাকতে পারে। এসব ঘটনার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে দুর্বল করার অপচেষ্টা হতে পারে,” মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, বিমানবন্দরের মতো স্থানে প্রস্তুতির ঘাটতি থাকা অগ্রহণযোগ্য। ফায়ার অ্যালার্ম, প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় সমন্বয়ের অভাবই ব্যবস্থাপনার বড় দুর্বলতা।

এমন পরিস্থিতিতে **প্রযুক্তিনির্ভর ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি** জানিয়েছেন দুই সাবেক কর্মকর্তা। তাদের মতে, এসব আগুন নিছক দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত নাশকতা—তা উদঘাটন না হলে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকানো যাবে না।

শনিবার বিকেলে বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি স্টেশনের ৩৭টি ইউনিট। সহায়তা দেয় বিমান বাহিনীর দুটি ইউনিট, নৌবাহিনী, সেনাবাহিনী, বিজিবি ও আনসার সদস্যরা।

এর আগে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম ইপিজেডের **অ্যাডামস ক্যাপস অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড** ও **জিহং মেডিকেল কোম্পানির** গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। প্রায় ১৭ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ফায়ার সার্ভিস জানায়, ভবনটির **অগ্নিনিরাপত্তা সনদ ছিল না**, এবং ন্যূনতম নিরাপত্তা ফাঁকা জায়গাও রাখা হয়নি—যার কারণে আগুন নেভাতে দেরি হয়।