সোমবার   ১৩ অক্টোবর ২০২৫   আশ্বিন ২৮ ১৪৩২   ২০ রবিউস সানি ১৪৪৭

শেষ পর্যন্ত এনসিপি ইতিবাচক অবস্থানে আসবে, আশা সিইসির

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত : ১১:১১ এএম, ১৩ অক্টোবর ২০২৫ সোমবার

শাপলা প্রতীক ছাড়া এনসিপি নির্বাচনে যাবে না– দলটির নেতাদের এ বক্তব্যের বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, চব্বিশের আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাদের দল এনসিপি। তাদের আমি দেশপ্রেমিক হিসেবে জানি। আমি মনে করি না, এনসিপি গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে বাধা সৃষ্টি করবে। বরং গণতন্ত্রের উত্তরণ যাতে সুন্দর ও সুষ্ঠু হয়, সে পরিবেশ তৈরিতে তারা সম্মতি দেবে। রাজনীতিতে কোনো অবস্থান চূড়ান্ত নয়। আশা করছি, শেষ পর্যন্ত এনসিপি ইতিবাচক অবস্থানে আসবে। রোববার চট্টগ্রাম বিভাগের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, নির্বাচনী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন সিইসি।

কমিশন চাইলে প্রতীক কমাতে বা বাড়াতে পারে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, কমিশনের নির্ধারিত তালিকায় না থাকায় এনসিপিকে শাপলা প্রতীক দেওয়া যায়নি। সুযোগ থাকলেও প্রতীক কমানো বা বাড়ানোর বিষয়ে আমরা এখনও সিদ্ধান্ত নিইনি।

নগরীর কাজীর দেউড়ির সার্কিট হাউসে মতবিনিময়ে সম্প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রামের সংঘাত ছাড়া, সারাদেশের মব ভায়োলেন্স ও সংসদ নির্বাচন ঘিরে সামাজিক মাধ্যমের অপব্যবহার নিয়ে আলোচনা হয়। উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. জিয়াউদ্দীন, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবীব পলাশ প্রমুখ।

সিইসি বলেন, দল নিবন্ধনের সময়ই কমিশনের নির্ধারিত প্রতীক তালিকা থেকে একটি নিতে বলা হয়। এখন পর্যন্ত তালিকার বাইরে কাউকে প্রতীক দেওয়া হয়নি। শাপলা তালিকায় নেই বলে এনসিপিকে দিতে পারিনি।

নাসির উদ্দিন বলেন, আমরা রাতে নয়, সবার সামনে একটি স্বচ্ছ নির্বাচন উপহার দিতে চাই। এ বিষয়ে আমাদের নিয়তে কোনো ত্রুটি নেই। আমরা একটি অংশগ্রহণমূলক, নিরপেক্ষ ও নিরাপদ নির্বাচন আয়োজন করতে চাই। সাংবাদিক, ভোটার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী– সবাই মিলে এ লক্ষ্য অর্জন সম্ভব।

তিনি বলেন, নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার অংশ হিসেবে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। চট্টগ্রামসহ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা শনাক্ত করে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য, নারী-পুরুষনির্বিশেষে প্রত্যেক ভোটার যেন নিরাপদ পরিবেশে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন।

ঘটনা ঘটলে তা যাচাই করে প্রচারের আহ্বান জানিয়ে সিইসি বলেন, সামাজিক মাধ্যমে ভুল তথ্য ও বিভ্রান্তি প্রতিরোধে আমরা একটি বিশেষ সেল করেছি। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ এর সঙ্গে যুক্ত। বিশ্বে এআইয়ের অপব্যবহার এখন বড় চ্যালেঞ্জ। এআইয়ের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া গুজবের ৫০ শতাংশ সোর্স শনাক্ত করা কঠিন। কেউ কেউ পরামর্শ দিচ্ছেন, ভোটের দিন ইন্টারনেট বন্ধের। কিন্তু আমরা এর পক্ষপাতি নই। আমরা তথ্যের অবাধ প্রবাহ চাই।

তিনি আরও বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে পোস্টাল ব্যালটের ব্যবস্থা করা হবে। বিদেশে থাকা বাংলাদেশিদের ভোটের সুযোগ দেশের নির্বাচনী ইতিহাসে নতুন অধ্যায় হবে। প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসাররা ভোট নেন; নিজেরা দিতে পারেন না। আমরা তাদের ভোটদানের ব্যবস্থা রাখছি।