শুক্রবার   ০৩ অক্টোবর ২০২৫   আশ্বিন ১৭ ১৪৩২   ১০ রবিউস সানি ১৪৪৭

ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি না দেওয়ায় তোপের মুখে নিউজিল্যান্ড সরকার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত : ০১:০৯ পিএম, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সোমবার

ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়ায় বিরোধী দল, মানবাধিকার সংগঠন, ধর্মীয় নেতা থেকে শুরু করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত নিউজিল্যান্ড সরকারের কড়া সমালোচনা করেছেন। সমালোচকদের মতে, সরকারের এ সিদ্ধান্ত ইতিহাসে ‘ভুল পাশে দাঁড়ানো’ হিসেবে স্বীকৃত হবে।

গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও ফ্রান্সসহ একাধিক দেশ ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়। ইতোমধ্যেই জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ১৫৭ দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ফলে ধারণা করা হচ্ছিল, নিউজিল্যান্ডও একই পথে হাঁটবে।

কিন্তু জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভাষণ দিতে গিয়ে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইনস্টন পিটার্স জানান, এখনই ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না। তার দাবি, যুদ্ধ পরিস্থিতি চলমান, গাজায় এখনো হামাস সক্রিয় এবং ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র কাঠামো স্পষ্ট নয়। এ অবস্থায় স্বীকৃতি শান্তি প্রচেষ্টাকে জটিল করে তুলতে পারে।

এই সিদ্ধান্তে দেশটিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অকল্যান্ডে কয়েক হাজার মানুষ ফিলিস্তিনের সমর্থনে বিক্ষোভ করেছে। এমনকি ক্যাথলিক ও অ্যাংলিকান ধর্মযাজকেরা এক মন্ত্রীর দপ্তরের সামনে নিজেদের শিকল দিয়ে বেঁধে প্রতিবাদ জানান।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী হেলেন ক্লার্ক সরকারের অবস্থানকে ‘অযৌক্তিক’ আখ্যা দিয়ে বলেন, “বিশ্ব যখন সমাধানের পথে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিচ্ছে, তখন নিউজিল্যান্ড পিছিয়ে পড়ছে।”

গ্রিন পার্টি এ সিদ্ধান্তকে দেশের ভাবমূর্তির জন্য “কলঙ্কজনক” বলে উল্লেখ করেছে। লেবার পার্টি একে “লজ্জাজনক” মন্তব্য করে বলেছে, ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি এবং ইসরায়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক আইনের পক্ষে অবস্থান নেওয়া হতো।

তবে প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লাক্সন সমালোচনার জবাবে বলেছেন, “আমরা ফিলিস্তিনপন্থি বা ইসরায়েলপন্থি নই, আমরা শান্তির পক্ষে। নিউজিল্যান্ড স্বাধীন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

পিটার্সের দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, স্বীকৃতি দেওয়ার সময় নিয়ে ভিন্নমত থাকলেও চূড়ান্ত লক্ষ্য দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান নিশ্চিত করা।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত ৬৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার আহত হয়েছেন। অবরোধের কারণে উপত্যকায় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষও ছড়িয়ে পড়েছে।