গণপরিষদ নির্বাচন নিয়ে এনসিপির মাথাব্যথা, প্রয়োজনে আন্দোলন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ০৪:১৪ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বুধবার

এনসিপি গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিতে সোচ্চার
জাতীয় নির্বাচন নয়, গণপরিষদ নির্বাচন নিয়ে এনসিপির মাথাব্যথা বেশি। বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে, কিন্তু এনসিপি গণপরিষদ নির্বাচন নিয়ে প্রয়োজনে অন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এনসিপি মনে করছে, বর্তমান সংসদীয় ব্যবস্থা জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধি নয়। গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সংবিধান প্রণয়ন, রাজনৈতিক কাঠামোর সংস্কার এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা সম্ভব।
“আমাদের দাবি শুধু নির্বাচন নয়। একটি বড় দলের দাবি শুধু নির্বাচন। আমরা দাবিগুলো নিয়ে জনগণের কাছে যাবো, জনমত গঠনের মাধ্যমে রাজপথে থাকবো।”
– মনিরা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক, এনসিপি
কেন্দ্রীয় নেতাদের যৌক্তিকতা
দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা বিভিন্ন সভা-সেমিনার এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনেও গণপরিষদ নির্বাচনের যৌক্তিকতা তুলে ধরেছেন। গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করলে তা সর্বজন গ্রহণযোগ্য হবে।
তবে এনসিপি জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের বিরোধিতা করছে না। সরকারঘোষিত ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন-এ তারা বাধা দেয়নি।
“নতুন সংবিধান ও গণপরিষদ নির্বাচন প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে আমরা গণপরিষদ নির্বাচনের জন্য ওয়ান পার্সেন্টও ছাড় দেবো না।”
– নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, মুখ্য সমন্বয়ক, এনসিপি
গণপরিষদ নির্বাচন কী?
গণপরিষদ নির্বাচন হলো জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে একটি প্রতিনিধিত্বমূলক পরিষদ গঠন করা, যার কাজ হবে নতুন সংবিধান প্রণয়ন। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে একবার গণপরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যার মাধ্যমে দেশের প্রথম সংবিধান প্রণীত হয়েছিল।
এনসিপি চাচ্ছে এই প্রক্রিয়া পুনরায় চালু হোক, তবে বর্তমান বাস্তবতার আলোকে।
রাজনীতি ও আন্দোলন
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে এনসিপি সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, গণপরিষদ নির্বাচন ছাড়া নতুন সংবিধানে সংশোধনী ও সংস্কার টেকসই হবে না।
এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা বিভিন্ন সভা-সেমিনারে গণপরিষদ নির্বাচনের যৌক্তিকতা তুলে ধরছেন। ধীরে ধীরে জনমত গঠনের মাধ্যমে সরকারকে এই নির্বাচন দিতে বাধ্য করবেন। যদি অন্য রাজনৈতিক দল জাতীয় নির্বাচনের দিকে এগোয়, এনসিপি রাজপথে আন্দোলন করবে।
নেতাদের মন্তব্য
মনিরা শারমিন বলেন, “গণপরিষদ নির্বাচনের কথা বারবার বলছি। পূর্বেও বাংলাদেশে গণপরিষদ নির্বাচন হয়েছে। তার মাধ্যমে সংবিধান প্রণীত হয়েছে।”
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, “জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিরোধিতা করছি না। সংসদ নির্বাচন হোক, গণপরিষদ নির্বাচনও হোক। আমরা সিম্পোজিয়াম, সেমিনার এবং রাজপথের সব কর্মকাণ্ড করব।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকের দৃষ্টিকোণ
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. স ম আলী রেজা বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বোঝাপড়ার ঘাটতি আছে। নির্বাচনের তারিখ ঘোষিত হওয়া হঠাৎ নয়।
“গণপরিষদ নিয়ে বলা হচ্ছে ‘ইট ইজ টু লেট’। সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর আরও সিরিয়াসলি এনগেজড হওয়া জরুরি। নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষিত, নির্বাচন কমিশন কাজ শুরু করেছে।”
এনসিপি দাবি করছে, গণপরিষদ নির্বাচন হয়ে তা পরবর্তী সময়ে সংসদে রূপ নেবে। বর্তমান সংবিধানের অধীনে এটি সম্ভব নয়।