বাংলাদেশকে টপকাতে জাহাজ ভাঙায় প্রণোদনা দিচ্ছে ভারত
মোঃ মোসাদ্দেক হোসাইন ইমন, স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত : ০১:২১ পিএম, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ মঙ্গলবার

বৈশ্বিক জাহাজ ভাঙা শিল্পে শীর্ষস্থান দখলে নিতে বড় পরিকল্পনায় নামছে ভারত। বর্তমানে এ খাতে এককভাবে শীর্ষে থাকা বাংলাদেশকে টপকে যেতে নতুন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করতে যাচ্ছে দেশটি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, ২০২৬ সাল থেকে পরবর্তী ১০ বছর ধরে জাহাজ ভাঙা খাতে প্রায় ৪০ বিলিয়ন রুপি (৪ হাজার কোটি) প্রণোদনা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত। এর লক্ষ্য হলো বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের কাছ থেকে বাজারের অংশীদারিত্ব পুনরুদ্ধার করা।
কী সুবিধা থাকছে প্রণোদনায়?
প্রস্তাবিত প্যাকেজ অনুযায়ী, পুরোনো জাহাজ নিয়ে ভারতে এলে মালিকরা স্ক্র্যাপ মূল্যের প্রায় ৪০ শতাংশ ক্রেডিট নোট পাবেন। এ নোট তিন বছর পর্যন্ত বৈধ থাকবে এবং তা দিয়ে ভারতে নির্মিত জাহাজ কেনা যাবে। মালিকরা চাইলে একত্রে ব্যবহার করতে পারবেন বা বিক্রিও করতে পারবেন।
ভারতের বর্তমান অবস্থা
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী ভাঙা জাহাজের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ভেঙেছে ভারতে। তবে একই সময়ে এককভাবে ৪৬ শতাংশ জাহাজ ভাঙা হয়েছে বাংলাদেশে। পাকিস্তানও উল্লেখযোগ্য বাজার ধরে রেখেছে।
ভারতের পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত আলাং শিপইয়ার্ড বিশ্বের সবচেয়ে বড় জাহাজ ভাঙার স্থান, যেখানে দেশটির প্রায় ৯৮ শতাংশ ব্যবসা পরিচালিত হয়। তবুও সস্তা শ্রমশক্তির কারণে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের কাছে বাজার হারাচ্ছে ভারত।
নতুন ঘাঁটির পরিকল্পনা
এনডিটিভি সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ থেকে ব্যবসা সরিয়ে আনতে ভারত পূর্ব উপকূলে নতুন একটি জাহাজ ভাঙার ঘাঁটি তৈরির পরিকল্পনা করছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার চলতি মাসেই ২৫০ বিলিয়ন রুপি সমপরিমাণ সামুদ্রিক উন্নয়ন তহবিল অনুমোদন করতে যাচ্ছে। এতে দেশীয় জাহাজ নির্মাণে উৎসাহ দেওয়া ও বিদেশি জাহাজের ওপর নির্ভরশীলতা কমানো হবে।
বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে তেলের ট্যাঙ্কার ভাঙা কমে যায়, এতে খাতটি দীর্ঘসময় মন্দায় ছিল। তবে ভূ-রাজনৈতিক সংকটের কারণে জাহাজের রুট পরিবর্তন ও ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় অনেক মালিক পুরোনো জাহাজ দীর্ঘদিন চালাতে বাধ্য হচ্ছেন।
তবে প্রস্তাবিত প্রণোদনা অনুমোদিত হলে বৈশ্বিক জাহাজ পুনর্ব্যবহার খাতে ভারতের অবস্থান আরও শক্তিশালী হবে বলে আশা করছে দেশটি।