সোমবার   ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫   ভাদ্র ৩১ ১৪৩২   ২২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

শপথ নিলেন নেপালের নতুন ৩ মন্ত্রী, জেন জি-দের আপত্তি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত : ০৩:২৭ পিএম, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সোমবার

জেন জি-দের আপত্তি উপেক্ষা করেই শপথ নিয়েছেন নেপালের নতুন তিন মন্ত্রী। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শীতল নিবাসে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পৌডেল তাদের শপথবাক্য পাঠ করান।

এদিন নেপালের অর্থমন্ত্রী হিসেবে রমেশ্বর খনাল, জ্বালানি মন্ত্রী হিসেবে কুলমান ঘিসিং এবং স্বরাষ্ট্র ও আইনমন্ত্রী হিসেবে ওম প্রকাশ আর্যাল শপথ নেন।

শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডেন্ট পৌডেল, ভাইস-প্রেসিডেন্ট রামসহায় প্রসাদ যাদব, জাতীয় পরিষদের চেয়ারম্যান নারায়ণ প্রসাদ দাহালসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতারা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বাবুরাম ভট্টরায়ও অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

মন্ত্রী হওয়ার আগে কুলমান ঘিসিং নেপাল বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। আর্যাল ছিলেন কাঠমান্ডুর মেয়র বালেন শাহর আইনি উপদেষ্টা। অন্যদিকে রমেশ্বর খনাল ছিলেন দেশের সাবেক অর্থসচিব

এদিকে, জেন জি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পরামর্শ না করেই মন্ত্রী নিয়োগ দেওয়ায় অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কির পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে। রোববার রাতে বালুওয়াটারে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে সুদান গুরুংয়ের নেতৃত্বে স্লোগান দিতে থাকেন বিক্ষোভকারীরা।

তাদের অভিযোগ, নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের ক্ষেত্রে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কোনো পরামর্শ করা হয়নি। তাই কার্কির পদত্যাগ ছাড়া বিকল্প নেই বলে তারা দাবি করেন।

সুদান গুরুং হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আমরা যদি আবার রাস্তায় নামি, কেউ আমাদের থামাতে পারবে না। আমরা যেখানেই বসিয়েছি, সেখান থেকে উপড়ে ফেলবো।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, আইনজীবী ওম প্রকাশ আর্যাল ভেতর থেকে নিজেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বানিয়ে নিয়েছেন। এসময় গুরুং সঙ্গে নিয়ে আসেন গত সপ্তাহের বিক্ষোভে নিহত ও আহতদের স্বজনদেরও।

দুর্নীতি, সরকারবিরোধী নিপীড়ন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে গত ৮ সেপ্টেম্বর রাস্তায় নামে নেপালের তরুণ সমাজ। কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনী জলকামান, টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট এবং গুলি ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা চালায়। বিভিন্ন শহরে কারফিউ জারি হয়।

তবে আন্দোলনকারীরা দমে না গিয়ে পরদিনও বিক্ষোভ চালিয়ে যান। চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি। এরপর বিভিন্ন নেতার বাড়ি ও সরকারি ভবনে হামলা ও অগ্নিসংযোগ হয়। নেপালের সহিংসতায় এ পর্যন্ত অন্তত ৭২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

এ অবস্থায় গত ১২ সেপ্টেম্বর নেপালের ইতিহাসে প্রথম নারী সরকারপ্রধান হিসেবে শপথ নেন সাবেক বিচারপতি সুশীলা কার্কি। জেন জি আন্দোলনকারীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এবং প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পৌডেল ও প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার পর কার্কিকে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়।