নেপালে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবিতে রাস্তায় জেন জি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত : ০৩:১৩ পিএম, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সোমবার

নেপালে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবিতে রাস্তায় জেন জি আন্দোলনকারীরা / ছবি: সেতোপাতি, এএফপি
আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পরামর্শ ছাড়াই মন্ত্রী নিয়োগ দেওয়ায় নেপালের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কির পদত্যাগ দাবিতে আবারও রাস্তায় নেমেছে জেন জি। রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে বালুওয়াটারে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে জেন জি আন্দোলনের নেতা সুদান গুরুংয়ের নেতৃত্বে স্লোগান দিতে থাকেন বিক্ষোভকারীরা।
তাদের অভিযোগ, নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের ক্ষেত্রে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কোনো পরামর্শ করা হয়নি। তাই কার্কির পদত্যাগ ছাড়া বিকল্প নেই বলে তারা দাবি করেন।
সুদান গুরুং হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আমরা যদি আবার রাস্তায় নামি, কেউ আমাদের থামাতে পারবে না। আমরা যেখানেই বসিয়েছি, সেখান থেকে উপড়ে ফেলবো।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আইনজীবী ওম প্রকাশ আর্যাল ভেতর থেকে নিজেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বানিয়ে নিচ্ছেন। এসময় গুরুং সঙ্গে নিয়ে আসেন গত সপ্তাহের বিক্ষোভে নিহত ও আহতদের স্বজনদেরও।
রোববার প্রধানমন্ত্রী কার্কি আইনজীবী ওম প্রকাশ আর্যালকে স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন। এর আগে তিনি রমেশ্বর খনালকে অর্থমন্ত্রী এবং কুলমান ঘিসিংকে জ্বালানি মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন।
অর্থমন্ত্রী রমেশ্বর খনাল সাবেক অর্থসচিব। কুলমান ঘিসিং বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের সাবেক এমডি, যিনি লোডশেডিং কমিয়ে জনআস্থা অর্জন করেছিলেন।
সূত্র জানিয়েছে, কার্কি প্রথমে ফোনে তিনজনের সঙ্গেই আলাদাভাবে কথা বলেন, পরে অফিসে ডেকে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন। এর আগে তিনি সবিতা ভান্ডারীকে অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দেন।
রোববার সকালে কার্কি মন্ত্রিসভা গঠনের আলোচনা শুরু করেন। সর্বোচ্চ ১১–১৫ সদস্যের মন্ত্রিসভা গঠন করা হবে বলে জানা গেছে। ফলে মন্ত্রীদের একাধিক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।
দুর্নীতি, সরকারবিরোধী নিপীড়ন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে গত ৮ সেপ্টেম্বর রাস্তায় নামে নেপালের তরুণ সমাজ। নিরাপত্তা বাহিনী জলকামান, টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট ও গুলি ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা চালায়। বিভিন্ন শহরে কারফিউ জারি হয়।
চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি। এরপরই বিভিন্ন নেতার বাড়ি ও সরকারি ভবনে হামলা হয়। নেপালের সহিংসতায় এখন পর্যন্ত অর্ধ শতাধিক মানুষের মৃত্যুর খবর মিলেছে।
এ অবস্থায় গত ১২ সেপ্টেম্বর নেপালের ইতিহাসে প্রথম নারী সরকারপ্রধান হিসেবে শপথ নেন সাবেক বিচারপতি সুশীলা কার্কি। জেন জি আন্দোলনকারীদের দাবির প্রেক্ষিতে এবং প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পৌডেল ও প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার পর কার্কিকে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়।