নাজেহাল অবস্থায় মাদারটেক সড়ক
মোঃ সুমন হোসেন
প্রকাশিত : ০৪:১১ পিএম, ১৭ জুলাই ২০২৫ বৃহস্পতিবার

ঝুঁকিপূর্ণভাবে যাতায়াত করছেন প্রায় ১২ লক্ষাধিক মানুষl -ছবি : মোঃ সুমন হোসেন
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সবুজবাগ থানার মাদারটেক সড়কটি প্রশস্ত ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার কাজের জন্য দুই মাস আগে খোঁড়া হয়। সেই থেকে সড়কটি মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এটি একটি ব্যস্ততম সড়ক। সংলগ্ন কয়েকটি এলাকার দশ লক্ষাধিক মানুষের প্রতিদিন যাতায়াত করার একমাত্র সড়ক এটি। কাজের অজুহাতে সড়কটি দুই মাস ধরে খুঁড়ে রাখার কারণে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের।
পুরো সড়কে বৃষ্টির পানি জমে বোঝার উপায় নেই-এটি সড়ক নাকি ঝিল। ঝুঁকি নিয়ে যানবাহনে চড়ে পাড়ি দিতে হচ্ছে সড়কটি। প্রতিদিন অফিসগামী মানুষ পড়ছে চরম দুর্ভোগে। সড়কের দুই পাশেই রাখা বড় বড় পাইপ ও ছোট-বড় নির্মাণ যন্ত্র। এখানে চোখে পড়বে জুতা খুলে মানুষের যাতায়াতের দৃশ্য।
বাসাবো ফ্লাইওভারের ঢাল থেকে নন্দীপাড়া ব্রিজ এবং বাসাবো সড়কটি কোথাও ৪০ ফুট, কোথাও ৩৫ ফুট, আবার কোথাও ২৭/২৮ ফুট প্রশস্ত। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকাবাসীর কথা মাথায় রেখে সড়কটি ৬০ ফুট প্রশস্ত করার জন্য দরপত্র আহ্বান করে। সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর বিভিন্ন সমস্যার কারণে কর্তৃপক্ষ পূর্বের টেন্ডার বাতিল করে নতুন করে দরপত্র আহ্বান করে। এসিএলপিসি-জেডি নামের একটি প্রতিষ্ঠান দরপত্রের মাধ্যমে ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও সড়ক উন্নয়নের কাজটি পায়। চলতি বছরের ২ মার্চ কাজ শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী ২০২৬ সালের ১৪ এপ্রিলের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে।
গত কুরবানির ঈদের আগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করলেও এলাকার ব্যবসায়ীদের দাবির কারণে কর্তৃপক্ষ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে কাজ বন্ধ রাখার জন্য অনুরোধ করেন। এরপর পরপরই এইচএসসি পরীক্ষা থাকায় অভিভাবকদের দাবির কারণে আবারো সেই কাজ বন্ধ হয়। মূলত এসব কারণেই দীর্ঘদিন ধরে খুঁড়ে রাখা এই সড়কটিতে কাজের ধীরগতি।
সরেজমিন দেখা গেছে, নন্দীপাড়া ব্রিজ থেকে সিঙ্গাপুর সড়ক এবং ওয়াসা সড়ক পাইপলাইনের কাজের জন্য রাস্তা খুঁড়ে রাখা হয়েছে। ফলে সড়কে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের। বর্ষায় সেই গর্তে পানি জমে কাদামাটি এবং ময়লা আবর্জনার কারণে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। হাঁটু সমান দুর্গন্ধযুক্ত পানির কারণে পায়ে হেঁটে চলারও কোনো অবস্থা নেই। ঝুঁকি নিয়ে অটোরিকশা, টেম্পো ও সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে এ সড়কে যাতায়াত করতে হচ্ছে পথচারীদের। সড়কের দুই পাশজুড়ে ভারী পাইপ ও নির্মাণ যন্ত্র রাখার কারণে জনসাধারণের ভোগান্তি চরমে। মতিঝিল অফিস পাড়া ও কমলাপুর রেল স্টেশন কাছাকাছি হওয়ায় সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মানুষের ঢল নামে। সড়কের এমন দুরবস্থার কারণে জনসাধারণের দুর্ভোগ চরম সীমায় পৌঁছে গেছে।
এই সড়কটি দিয়ে শেখের জায়গা, ৪নং ওয়ার্ড মাদারটেক, ৭৪নং ওয়ার্ড নন্দীপাড়া, ৭৩নং ওয়ার্ড দক্ষিণগাঁও, সরকারপাড়া, পাটোয়ারী বিল্ডিং, বাসাবো, দক্ষিণগাঁওসহ স্টাফ কোয়ার্টার ও ডেমরা এলাকার লোকজন মতিঝিলে অফিসে যাতায়াত করেন। এসব এলাকার প্রায় ১০ লক্ষাধিক মানুষ সড়কটি ব্যবহার করেন। সড়ক উন্নয়নের জন্য খোঁড়াখুঁড়ি করা হলেও মূলত কাজের ধীরগতির কারণে দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। ভুক্তভোগীরা বলেন, বর্ষা মৌসুমে এমন উন্নয়নমূলক কাজ চান না তারা।