বৃহস্পতিবার   ০৩ জুলাই ২০২৫   আষাঢ় ১৮ ১৪৩২   ০৭ মুহররম ১৪৪৭

অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশু আজান দিতে পারবে?

ইসলাম ডেস্ক    

প্রকাশিত : ০৩:৩৭ পিএম, ২ জুলাই ২০২৫ বুধবার

আজান নামাজের সাথে সম্পৃক্ত ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ আমল। শরিয়তের বিধান অনুযায়ী আজান প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদেরই দেওয়া উচিত। কারণ সঠিক সময়ে যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করে আজান দেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ যা একজন প্রাপ্তবয়স্ক দায়িত্ববান মানুষ আঞ্জাম দিতে পারেন। এ দায়িত্ব কোনো শিশুকে দেওয়া সমীচীন নয়।

তবে পবিত্রতা, নামাজ ও আজানের জ্ঞান আছে এমন অপ্রাপ্তবয়স্ক কোনো শিশু যদি শুদ্ধভাবে, স্পষ্ট উচ্চারণে ও উচ্চৈস্বরে আজান দিতে সক্ষম হয়, তাহলে তার দেওয়া আজান শরীয়তসম্মত বলে গণ্য হবে। এ ক্ষেত্রে দেখতে হবে আজানের মূল যে লক্ষ্য অর্থাৎ মানুষকে নামাজের জন্য ডাকা ও সচেতন করা এবং মসজিদে কিছুক্ষণের মধ্যে নামাজ শুরু হবে এই বার্তা পৌঁছে দেওয়া এটি পূরণ হচ্ছে কি না। যদি শিশুর আজানের মাধ্যমে এই লক্ষ্য পূরণ হয়, তাহলে আজান শুদ্ধ হবে। নতুন করে আজান দিতে হবে না।

 

আজান সুন্নতে মুআক্কাদা কেফায়া

প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জন্য পাঁচবার মসজিদ থেকে আজান দিতে হয়। এ ছাড়া সফরে বের হলে, মসজিদ নেই এমন কোনো জায়গায় নামাজ পড়লেও আজান দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন রাসুল (সা.)। রাসুল (সা.) বলেছেন, যখন নামাজের সময় হয়, তোমাদের কেউ যেন আজান দেয় তোমাদের বয়োজ্যষ্ঠ ব্যক্তি যেন ইমামতি করে। (সুনানে আবু দাউদ)

পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের জন্য আজান দেওয়া সুন্নাতে মুআক্কাদা কেফায়া। অর্থাৎ কোনো মহল্লার মসজিদে আজান না হলে বা কেউ আজান না দিলে সুন্নত ছেড়ে দেওয়ার জন্য সবাই গুনাহগার হবে। মসজিদ ছাড়া বাড়িতে বা অন্য কোথাও একাকী বা জামাতে নামাজ পড়লে আজান দেওয়া মুস্তাহাব।

কোনো নামাজের আজান দিতে হবে ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পর। ওয়াক্ত হওয়ার আগে আজান দিলে তা শুদ্ধ হবে না, ওয়াক্ত হওয়ার পর আবার আজান দিতে হবে।


আজান দেওয়ার ফজিলত
আজান দেওয়া অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ আমল। মুআজ্জিন আল্লাহর কাছে অত্যন্ত মর্যাদার অধিকারী। বিভিন্ন হাদিসে আজান দেওয়ার প্রভূত ফজিলত ও সওয়াব বর্ণিত হয়েছে। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, মুয়াজ্জিনের আজান ধ্বনির শেষ সীমা পর্যন্ত তাকে ক্ষমা করা হয় এবং প্রত্যেক সজীব ও নির্জীব বস্তু তাকে সত্যায়ন করে। (মুসনাদে আহমদ)


আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুর রহমান ইবনে সা’সাআহ (রহ.) বলেন, একদিন আবু সাইদ খুদরি (রা.) তাকে বললেন, তুমি তো ছাগল ও মরুভূমি ভালবাসো। তুমি যখন তোমার ছাগল চরানোর কাজে বা মরুভূমিতে থাকবে আর নামাজের জন্য আজান দেবে, তখন উচ্চৈস্বরে আজান দিয়ো। কারণ মুয়াজ্জিনের আজানের ধ্বনি যতদূর পর্যন্ত মানুষ, জিন ও অন্যান্য বস্তু শুনতে পাবে, কেয়ামতের দিন তারা তার জন্য সাক্ষ্য দেবে। আমি এটা আল্লাহর রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কাছে শুনেছি। (সহিহ বুখারি)