প্রধান উপদেষ্টাকে জানানোর পর সিদ্ধান্ত: মন্ত্রিপরিষদ সচিব
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ০৩:৩২ পিএম, ২৮ মে ২০২৫ বুধবার

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জানানোর পর সচিবালয়ে আন্দোলনরত সরকারি কর্মচারীদের দাবি দাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশীদ।
বুধবার (২৮ মে) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, “মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে কর্মচারীদের কথা ও গতকালের আলোচনার বিষয়টি জানানো হয়েছে। এখন এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়। তাই তিনি বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরবেন। তারপর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে।”
সালেহ আহমেদ বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফিরলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বিষয়টি তার কাছে তোলা হবে।”
এরআগে বুধবার (২৮ মে) আন্দোলনরত কর্মচারীদের ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ প্রতাহারের বিষয় নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেন সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ পর্যালোচনায় কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত ভূমি সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ।
এদিকে কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের নেতারা জানিয়েছেন, তারা ভূমি মন্ত্রণালয় সিনিয়র সচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে বৈঠকের আপডেট জানবেন। এরপর তারা তাদের পরবর্তী কর্মসূচি জানাবেন।
চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধুমাত্র কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুত করা যাবে। এমন বিধান রেখে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করা হয়।
গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অধ্যাদেশটির খসড়া অনুমোদনের পর গত শনিবার (২৪ মে) থেকেই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আইনটি প্রত্যাহারের দাবিতে সচিবালয়ে বিক্ষোভ করে আসছিলেন। এরপর সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সবগুলো সংগঠন সম্মিলিতভাবে মঙ্গলবার পর্যন্ত বিক্ষোভ চালিয়ে যায়। তারা এই অধ্যাদেশটিকে নিবর্তনমূলক ও কালো আইন হিসেবে অবহিত করছেন।
তারা টানা আন্দোলনের এক পর্যায়ে মঙ্গলবার সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ পর্যালোচনায় কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত ভূমি সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করেন।
মঙ্গলবার ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে কর্মচারী নেতাদের সঙ্গে ভূমি সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদের সভাপতিত্বে বৈঠক হয়। সভায় আরও পাঁচজন সচিব অংশ নেন। এছাড়া সচিবালয়ে আন্দোলনরত কর্মচারীদের বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা সভায় যোগ দেন।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলে আন্দোলনরত কর্মচারীদের দাবির বিষয়টি বুধবার মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে জানাবেন সচিবেরা। এরপর সরকার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। বৈঠক শেষে উভয়পক্ষ প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান।
বৈঠকের বিষয় তুলে ধরে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ বলেন, “আমরা কয়েকজন সচিব বসে তাদের (আন্দোলনকারী) বক্তব্য শুনেছি। আসলে আমরা উভয়পক্ষই সরকারের কর্মচারী। সরকার একটা আইন করেছে। তারা এ বিষয়ে সংক্ষুব্ধ হয়েছে। আইনটি বাতিল চেয়েছে। আমরা তাদের দাবির সারাংশ বুধবার (২৮ মে) মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে উপস্থাপন করব। পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।”
তিনি বলেন, “আলোচনার স্বার্থে আন্দোলনকারীরা তাদের কর্মসূচি স্থগিত করেছেন।”এসময় আন্দোলনকারীদের পক্ষে সচিবালয় কর্মকর্তা কর্মাচরী সংযুক্ত পরিষদের মহাসচিব নিজাম উদ্দিন আহমেদ জানান, তারা কমিটির প্রধানের আশ্বাসে আপাতত আন্দোলন স্থগিত করেছেন। তবে বুধবার পরবর্তী করণীয় জানাবেন।
সচিবালয়ে কর্মচারীদের লাগাতার আন্দোলনের মধ্যে মঙ্গলবার সকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশিদ বেশ কয়েকজন সচিবকে নিয়ে জরুরি সভা করেন। ওই সভায় সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ পর্যালোচনায় কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। সেই সভা থেকেই কর্মচারী নেতাদের সঙ্গে কথা বলতে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
রোববার (২৫ মে) সন্ধ্যায় চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধুমাত্র কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুত করা যাবে এমন বিধান রেখে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করা হয়।