রাজশাহীতে প্রথম সোলার চার্জিং স্টেশন স্থাপন
প্রকাশিত : ০৩:১০ পিএম, ১৭ মে ২০১৯ শুক্রবার

নবায়নযোগ্য জ্বালানি হতে পরিবেশবান্ধব বিকল্প বিদ্যুৎ উৎপাদনের পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে রাজশাহীতে পৃথক ‘সোলার চার্জিং স্টেশন’ এবং ‘নেটমিটারিং স্টেশন’ স্থাপন করা হয়েছে। রাজশাহী পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি এবং স্থানীয় উদ্যোক্তার যৌথ মালিকানায় পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে এসব স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে।
রাজশাহীর পবা উপজেলার দামকুড়াহাটে স্থাপিত দৈনিক ৭০ থেকে ৯০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন ‘সোলার চার্জিং স্টেশন’এবং গোদাগাড়ী উপজেলার চব্বিশনগরে স্থাপিত ৪০ থেকে ৫০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন ‘নেটমিটারিং স্টেশনের সাফল্য বিদ্যুৎ খাতে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রযুক্তি সহজলভ্য ও সুলভ হলে এধরনের প্রকল্প গ্রহণে বেসরকারি উদ্যোগ উৎসাহিত হবে বলেও আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।]
তথ্য অধিদফতরের উদ্যোগে বুধবার বিকেলে রাজশাহী মহানগরীর উপকণ্ঠ দামকুড়াহাটের জনৈক শফিকুল ইসলামের বাড়িতে স্থাপিত ‘সোলার চার্জিং স্টেশন’ প্রকল্প সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন তথ্য অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং রাজশাহীতে কর্মরত বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিকরা। তথ্য অধিদফতর আয়োজিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১০টি বিশেষ উদ্যোগ বাস্তবায়ন বিষয়ে সাংবাদিকদের অবহিতকরণের অংশ হিসেবে তথ্য অধিদপ্তরের পরিদর্শন টিম সাংবাদিকদের নিয়ে স্পট ভিজিটে যান।
দামকুড়াহাট এলাকার মো. শফিকুল ইসলামের বাসভবন ও চত্বরে স্থাপিত ওই স্টেশন থেকে প্রতিদিন গড়ে ৭০ থেকে ৯০ কিলোওয়াট/ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়। এ বিদ্যুৎ ব্যবহৃত হচ্ছে প্রতিদিন গড়ে ৫/৬টি অটোরিক্সার ব্যাটারি রিচার্জের কাজে। স্থানীয় উদ্যোক্তা শফিকুল ইসলাম জানান, সোলার চার্জিং স্টেশনটি গত ২৬ জানুয়ারি চালু করা হয়েছে। তিনি ব্যাটারি রিচার্জ থেকে ফেব্রুয়ারি ও মার্চে ১৯ হাজার টাকা লভ্যাংশ পেয়েছেন। রাজশাহী পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির জিএম প্রকৌশলী এসএম মোজাম্মেল হক সাংবাদিকদের বলেন, সোলার চার্জিং স্টেশনটি নির্মাণে সরকারি তহবিল থেকে সর্বমোট ৪৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। এ প্রকল্প থেকে অর্জিত আয়ের ৫০ শতাংশ চেকের মাধ্যমে পাবেন সংশ্লিষ্ট জমির মালিক; বাকী ৪০ শতাংশ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি পাবে এবং অবশিষ্ট ১০ শতাংশ সোলার স্টেশন মেইনটেনেন্স বাবদ ব্যয় হবে। অটোরিক্সার রিচার্জের সংখ্যা বাড়লে এ থেকে আয় পর্যায়ক্রমে বাড়বে।
এদিকে সরেজমিনে স্পট পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন, তথ্য অধিদপ্তর, ঢাকার সিনিয়র উপ-প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়া, রাজশাহী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম প্রকৌশলী এসএম মোজাম্মেল হক এবং স্টেশনের জমিদাতা মো. শফিকুল ইসলাম। এসময় রাজশাহী আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-প্রধান তথ্য অফিসার মোহাম্মদ আফরাজুর রহমান, ঢাকাস্থ প্রধান কার্যালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার এসএম আবদুর রহমান ও রাজশাহী আঞ্চলিক কার্যালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার ফারুক মো. আব্দুল মুনিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় জানানো হয়, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জীবাশ্ম জ্বালানি গ্যাস, তেল, কয়লা অতিদ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। সরকার সার্বজনিন বিদ্যুৎ সুবিধা প্রদান এবং জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করণের অভিপ্রায়ে জ্বালানি বহুমূখী করণের উদ্যোগ নিয়েছে। এর আওতায় প্রচলিত জীবাশ্ম জ্বালানির পাশাপাশি নবায়নযোগ্য হতে পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদনে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালায় ২০৩০ সাল নাগাদ মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের ১০ শতাংশ নবায়নযোগ্য উৎস থেতে উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। সৌর শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ইতোমধ্যে প্রায় ২৭০ মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হয়েছে। যার সিংহভাগই এসেছে প্রত্যন্ত অঞ্চলে অফগ্রিড এলাকায় স্ট্যান্ড এলোন হিসেবে স্থাপিত সোলার হোম সিস্টেম হতে। এছাড়া নেটমিটারিং কার্যক্রম বিদ্যুৎ গ্রাহক নিজ স্থাপনায় স্থাপিত নবায়নযোগ্য জ্বালানি ভিত্তিক সিস্টেমে উৎপাদিত বিদ্যুৎ নিজে ব্যবহার করে উদ্ধৃত্ত বিদ্যুৎ বিতরণ গ্রীডে সরবরাহ করেন। এর ফলে গ্রাহকের বিদ্যুৎ খরচ সাশ্রয় হয় এবং কার্বনডাই অক্সাইড নিঃসরণ শূন্য।