শ্রীপুরে অবৈধ ভাবে ড্রামের তেল বোতলে ভরে বেশি দামে বিক্রি
মোঃ নজরুল ইসলাম,গাজীপুর উত্তর।
প্রকাশিত : ০৮:০৪ পিএম, ১১ জুলাই ২০২৩ মঙ্গলবার
কারখানার নেই কোনো অনুমোদন। তার পরও খোলা সয়াবিন তেল ড্রাম থেকে বোতলে ভরে বেশি দামে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে এক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুরে শ্রীপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে এ ধরনের কর্মকাণ্ড চলছে।
শ্রীপুর পৌরসভার আমতলা মোল্লাবাড়ির শামসুল হকের ভাড়া বাসায়’ ঘড়ের বিতর কয়েক জন নারী পুরুষ শ্রমিক ড্রাম থেকে পাইপ দিয়ে বোতলে তেল ভরছেন। এসব বোতলের গায়ে ‘প্রজাপতি’ লিখিত লেভেল লাগানো। ওই লেভেলের গায়ে বিএসটি আইয়ের লোগো দেওয়া। যদিও বিভিন্ন মাধ্যমে জানা যায় বিএসটিআইয়ের কোনো অনুমোদন তিনি পাননি।
অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ড্রামের ময়লাযুক্ত নিম্নমানের এসব তেল বোতলজাত করে বাজারে বেশি দামে বিক্রি করা হয়। এতে করে ব্যবসায়ী লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ক্রেতা সাধারণ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শ্রীপুরের কেওয়া বাজার আর্মি হানিফ মার্কেটে আমিনুল ইসলামের ’প্রজাপতি প্রিন্ট প্রেস’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেখান থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে আমতলা এলাকায় মোল্লাবাড়ির শামসুল হকের একটি বাসার বিতরে ড্রামের তেল বোতলে ভরে ঐ অফিস থেকে বিভিন্ন দোকানে বিক্রি করা হচ্ছে । আর সেখান থেকেই ক্রেতারা অতিরিক্ত দাম দিয়ে তেল সংগ্রহ করছেন। এতে করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ক্রেতা, এবং সাধারন মানুষকে পড়তে হচ্ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে।
এসব অভিযোগ শোনার পর স্থানীয়দের দেয়া তথ্যে সেই কারখানায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রথমে বাহির থেকে বিলবোর্ড বিহীন কারখানা দেখে বন্ধ মনে হয়। পরে গোপন সূত্রে প্রতিবেদক জানতে পারে ভিতরে শ্রমিকরা কাজ করছে। তখন এক নারীকে প্রতিবেদকের পরিচয় দিয়ে ভিতরে প্রবেশের অনুমতি চাইলে ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে প্রতিবেদকের পরিচয় গোপন করে ছদ্মনাম ব্যবহার করে কারখানার ভেতরে প্রবেশ করে দেখা যায়, খোলা সয়াবিন তেল ড্রাম থেকে বোতলে ভরে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ’প্রজাপতি প্রিন্ট প্রেস’ প্রতিষ্ঠানটির মালিক আমিনুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে প্রথমে এসব ব্যবসার কথা অস্বীকার করে। পরে সংরক্ষিত ভিডিও ফুটেজ দেখালে পরবর্তীতে ব্যবসার কথা স্বীকার করে সব লাইসেন্স আছে বলে দাবি করেন।
তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে এ ব্যবসা করে আসছি। প্রজাপতি একটি ব্র্যান্ড। এটার সকল ধরনের সরকারি অনুমোদনের কাগজ আছে। এখন মেশিনের হালনাগাদ চলতেছে। তাই কারখানা সাময়িক বন্ধ রয়েছে। কিন্তু বাজারে চাহিদা থাকার কারণে ৪-৫ কাটুনের অল্প কিছু মাল প্রস্তুত করতে হইতেছে।
তিনি আরোও বলেন, শ্রীপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এরকম আরো অনেকেই এ ধরনের ব্যবসা করছে তাদেরকে ধরেন না কেন।
স্থানীয় কয়েক জনের সাথে কথা বলে জানা যায়, এখানে কারখানার নেই কোন বিলবোর্ড। রাতে কারখানায় তেলভর্তি ড্রামের গাড়ি আসে। পরে সেগুলো বোতলজাত করে বাজারে বেশি দামে বিক্রি করেন সংশ্লিষ্টরা। তারা আরোও জানান এভাবে বোতলজাত করা অন্যায়। সেই সঙ্গে মেশিনে পরিশোধন ছাড়াই নোংরা পরিবেশে তেল বোতলজাত করে ক্রেতাদের ধোঁকা দিচ্ছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তরিকুল ইসলাম বলেন, সরকারের অনুমোদন ছাড়া যদি কোনো কারখানা চলে তবে সেটি অবৈধ। আমরা এ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করব। তদন্ত করে যদি সত্যতা পাওয়া যায়। তাহলে সংশ্লিষ্ট যারা এ সমস্ত অপরাধের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠিন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
