মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
রিয়াদ হোসাইন
প্রকাশিত : ০৬:৫২ পিএম, ১৫ মার্চ ২০২৩ বুধবার
ঢাকা রিপোর্টারর্স ইউনিটিতে সাংবাদিক সম্মেলন করেন
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বাশিস) মাধ্যমিক বিদ্যলয়ের শিক্ষক-কর্মচারীগণের চাকুরী জাতীয়করণের দাবীতে ১৫ মার্চ ঢাকা রিপোর্টারর্স ইউনিটিতে সাংবাদিক সম্মেলন করেন। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন-মহাসচিব আব্দুর রহমান, তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের স্বাধীনতার মূল চেতনা ছিল বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা।
প্রায় সকল ক্ষেত্রেই এই বৈষম্য দূরীকরণে সরকার সচেষ্ট হলেও শিক্ষাক্ষেত্রে এখনো বৈষম্য রয়ে গেছে। আজও আমাদের দেশে সরকারি এবং বেসরকারি নামে শিক্ষা ব্যবস্থাকে দ্বিধাবিভক্ত করে রাখা হয়েছে। যেখানে সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা একই এবং একই সিলেবাস ও কারিকুলামে পাঠদান করে থাকেন। সেখানে বেতন-ভাতার এই অসম পার্থক্য মেনে নেওয়া যায়না। সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই এই কারণে যে, তিনি ২০১৫ সালের জাতীয় বেতন স্কেলে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীগণকে সয়ংক্রীয়ভাবে অন্তর্ভূক্ত করেছেন এবং ৫% ইনক্রিমেন্ট প্রদান করেছেন।
কিন্তু তারপরেও স্নাতক বা স্নাতকোওর পাস করা একজন শিক্ষকের বেতনমাত্র ১২৫০০টাকা, ১০ বছর চাকুরি করার পরে একটি উচ্চতর স্কেল এবং ১৬ বছর চাকুরি করার পরে আরো একটি উচ্চতর স্কেল প্রদান করেও একজন শিক্ষকের সর্ব-সাকুল্যে বেতন দাঁড়ায় ২২০০০/- বা ২৩০০০/-টাকা মাত্র। ২০১৫ সালে জাতীয় বেতন স্কেল প্রদান করা হলেও প্রায় ৮ বছর পেরিয়ে গেছে এখনো নতুন কোন পে-স্কেল ঘোষণা করা হয়নি। দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতিতে সামান্য বেতনে শিক্ষক কর্মচারীগণের সংসার চালানো এবং সন্তানদের পড়ালেখার খরচ চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
শিক্ষক সমাজ আজ ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন। ২০০৪ সালে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীগণদের ২৫% উৎসব ভাতা প্রদান করা হলেও প্রায় ১৮ বছরে তা আর বাড়েনি। বাড়ি ভাড়া বাবদ প্রদান করা হয় ১,০০০/- টাকা। চিকিৎসা ভাতা বাবদ প্রদান করা হয় মাত্র ৫০০/- টাকা । ৫% ইনক্রিমেন্ট প্রদান করা হলেও অবসর ও কল্যাণ ভাতার জন্য অতিরিক্ত ৪% সহ মোট ১০% টাকা কেটে নেওয়া হয়। তাদের সন্তানদের জন্য কোন শিক্ষাভাতা প্রদান করা হয় না। অবসর ও কল্যাণ ভাতার টাকা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে তিন থেকে চার বছর অপেক্ষা করতে হয়। নাই কোনো অবসর পদ্ধতিমূলক চজখ ব্যবস্থা। সংবাদ সম্মেলনের আরো বলেন, প্রত্যেকটি সমস্যা নিরসনের একমাত্র পথ হলো বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীগণের চাকুরি জাতীয়করণ। বেসরকারি স্কুলের ছাত্র বেতনসহ সকল আয় সরকারের কোষাগারে জমা নিয়ে সেই টাকা দিয়েই শিক্ষক-কর্মচারিগণের চাকুরি জাতীয়করণ করে বেতন-ভাতাদি দেওয়া সম্ভব বলে তারা মনে করি। তারা বলেন, আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করছি আগামী ২০২৩-২৪ জাতীয় বাজেটেই বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারীগণের চাকুরি জাতীয়করণের জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ প্রদানে মাননীয় অর্থমন্ত্রী মহোদয়কে নির্দেশনা প্রদান করবেন এবং সেই লক্ষ্যে আগামী ঈদ-উল-ফিতরের পূর্বেই পূর্ণাঙ্গ ঈদ বোনাস প্রদানের যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। একই সাথে নীচের কর্মসুচি ঘোষণা করেন: (১) আগামী ২০/০৩/২০২৩খ্রি: তারিখ প্রতিটি জেলায় মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি পেশ। (২) জাতীয় বাজেট ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে শিক্ষক-কর্মচারীগণের চাকুরি জাতীয়করণ ঘোষণা ও অর্থ বরাদ্দ না হলে ঈদ পরবর্তীতে মাধ্যমিক স্তরের সকল শিক্ষক সংগঠনের সমন্বয়ে মহাসমাবেশ এর মাধ্যমে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের সভাপতি মোঃ ফরিদুল ইসলাম, মহাসচিব-মোঃ আব্দুর রহমান, ঢাকা মহনগর সভাপতি-সুলমতান নূরী, ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক-মোঃ জহির উদ্দিন খান, কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি-মোঃ শরীফুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক মোঃ ইব্রাহীম।
