বৃহস্পতিবার   ০১ জানুয়ারি ২০২৬   পৌষ ১৭ ১৪৩২   ১২ রজব ১৪৪৭

পঞ্চগড়ে ছয় মাসের মেয়েকে হত্যার দায়ে বাবার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ

মোঃ রাশেদুল ইসলাম,পঞ্চগড়

প্রকাশিত : ১১:২৭ এএম, ১৪ মার্চ ২০২৩ মঙ্গলবার

পঞ্চগড়ে ছেলে সন্তান না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে রত্না নামে ছয় মাস বয়সী কন্যা শিশুকে হত্যার দায়ে নাজিমুল হক ওরফে নাজমুল নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত। জানা গেছে, মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত নাজিমুল হক পঞ্চগড় সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের শিংরোড পূর্ব জয়ধরভাঙ্গা গ্রামের জয়নুল হকের ছেলে। সোমবার (১৩ মার্চ) দুপুরে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আনিসুর রহমান এ আদেশ দেন। আদালত ও মামলার এজাহার সুত্রে জানা গেছে ,প্রেমের সম্পর্কের জেরে নাজিমুলের সঙ্গে বিয়ে হয় একই এলাকার রশিদুল ইসলামের মেয়ে রশিদার। বিয়ের পর ছেলে সন্তান জন্ম না হয়ে একে একে তিনটি মেয়ে সন্তান জন্ম নেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে পারিবারিক কলহে জড়ান নাজিমুল। গত ২০১৯ সালে ৩১ মার্চ রাতে শিংরোড পূর্ব জয়ধরভাঙ্গা গ্রামে স্ত্রীসহ সন্তানদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতারি আঘাত করেন তিনি। একপর্যায়ে ছয় মাসের কন্যা শিশুকে হত্যা করেন নাজিমুল। স্ত্রীসহ অন্য দুই সন্তানদের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে ঘাতক বাবা পালিয়ে যান। স্থানীয়দের সহায়তা আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় ১৯ সালের পহেলা এপ্রিল পঞ্চগড় সদর থানায় শিশুটির নানা রশিদুল ইসলাম বাদী হয়ে নাজিমুলসহ তিনজনের নামে মামলা দায়ের করলে দীর্ঘ চার বছরের মাথায় নাজিমুল হককে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দেন আদালত। পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রীয়পক্ষের অতিরিক্ত আইনজীবী (পি. পি.) অ্যাডভোকেট মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, যথাযগ্য রায় প্রকাশ পেয়েছে। আদালতের এই রায়কে সাধুবাদ জানাই। এতে করে পঞ্চগড়ে এমন অপরাধের প্রবণতা অনেকটাই কমে আসবে বলে মনে করছি। এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীর দাবি আদালত যথাযথ পর্যালোচনা না করেই মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানান অ্যাডভোকেট আহসান হাবিব। এ বিষয়ে বাদী রশিদুল ইসলাম  জানান, আমার ছোট নাতনিকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয় এবং অপর দুই নাতনি ও মেয়েকে হত্যার চেষ্টা করে নাজিমুল। আমরা এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করলে দীর্ঘ চার বছরের মাথায় আদালতের মাধ্যমে সুষ্ঠু বিচার পেয়েছি।