রাজনীতিকদের মদতেই ভাটারায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে লালন ও শিপু গ্রুপ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ১২:২৫ পিএম, ২ জুন ২০২২ বৃহস্পতিবার

ডিশ, ইন্টারনেট ও ময়লার ব্যবসা থেকে শুরু করে ফুটপাত সবই নিয়ন্ত্রিত হয় তাদের ইশারায়। তারা বিদেশে পালিয়ে থাকা সন্ত্রাসী। দেশের কতিপয় অসাধু রাজনীতিবিদের মাধ্যমে এসব অবৈধ আয়ের পথ টিকিয়ে রেখেছে তারা। আর এ কাজে ব্যবহার করা হয় কিশোর-তরুণদের।
রাজধানীর ভাটারার নূরের চালা এলাকায় শান্ত হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করতে গিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ পেয়েছে এসব তথ্য। দুজনকে গ্রেফতারের পর পুলিশ বলছে, লালন ও শিপু গ্রুপের অন্তত ১০০ সদস্য দাপিয়ে বেড়ায় ভাটারার কয়েকটি এলাকা।
গত ১৪ মে রাজধানীর ভাটারার নূরের চালা এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়। লালন ও শিপু গ্রুপের সে দিনের সংঘর্ষে প্রাণ যায় শান্ত নামের এক যুবকের। শান্ত শিপু গ্রুপের একজন সক্রিয় সদস্য ছিল।
শান্তর মা ওই ঘটনায় বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও আট-দশজনকে আসামি করে মামলা করেন। থানা পুলিশের পাশাপাশি মামলাটির ছায়া তদন্ত করে গোয়েন্দা পুলিশ। এক নম্বর আসামি বুড়া ইমনসহ গ্রেফতার করা হয় এজাহারভুক্ত আরেক আসামিকে।
জানা গেছে, পূর্বপরিকল্পিতভাবে লালন গ্রুপ হামলা চালায় শান্ত গ্রুপের ওপর। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় শান্ত।
ভাটারা এলাকায় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের মদতে আধিপত্য বজায় রাখাকে কেন্দ্র করে খিলবাড়িরটেক ও শাহজাদপুরে তৈরি হয় লালন ও শান্ত গ্রুপ। দুটি গ্রুপে সদস্যসংখ্যা একশর বেশি। এদের ব্যবহার করে নানারকম অপকর্ম করে কতিপয় রাজনীতিবিদ।
গ্রেফতার এক আসামি বলেন, ‘কোনো ঝামেলা বা প্রোগ্রাম হলে আমরা ২০-৩০ জন এক জায়গায় জড়ো হতাম। এ ছাড়া আমরা ৭-৮ জন সবসময় আড্ডা দিতাম। মারামারি, চাঁদাবাজি, ভ্যানের টাকা, ভাঙচুর এসব বিষয় নিয়ে ঝামেলা বেশি হয়।’
পুলিশ বলছে, বিদেশে পালিয়ে থাকা সন্ত্রাসীরা নিয়ন্ত্রণ করে ডিশ, ইন্টারনেট ও ময়লার ব্যবসা। ব্যবহার করা হয় কিশোর-তরুণদের।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, ‘বিদেশি সন্ত্রাসীরা কিছু কিছু স্থানীয় ও ছিটেফোঁটা রাজনীতি করে থাকেন। তারাই মূলত এদের বাস্তবায়ন করেছেন এবং তাদের দিয়ে এখানে তারা ময়লার ব্যবসা, ইন্টারনেটের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। এই ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের জন্য যেমন করে বয়স্ক-মধ্যবয়সীদের দরকার হয়, কখনো কখনো রাস্তাঘাটে কামড়াকামড়ি করার জন্য এই ছোট-ছোট তরুণকে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
ভাটারা এলাকায় এ রকম আরও কয়েকটি গ্রুপ সম্পর্কে খোঁজে আছে পুলিশ।