সেই বিমানের ধ্বংসাবশেষে মিলল ১৪ মরদেহ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত : ১২:২৭ পিএম, ৩০ মে ২০২২ সোমবার

নেপালে চার ভারতীয় নাগরিকসহ ২২ আরোহী নিয়ে নিখোঁজ যাত্রীবাহী বিমানের সন্ধান পাওয়ার পর ধ্বংসাবশেষের আশপাশ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১৪টি মরদেহ। নেপালের বেসরকারি একটি এয়ারলাইন্স পরিচালিত ওই বিমানটি রোববার (২৯ মে) বিধ্বস্ত হয়েছিল। খবর দ্যা কাঠ মাণ্ডুপোস্টের। দুই ইঞ্জিনের নাইন-এনএইটি বিমানটিতে ১৩ জন নেপালি, চারজন ভারতীয়, দুজন জার্মান এবং তিনজন ক্রু ছিলেন।
সেনাবাহিনী জানায়, বিমানটি নিখোঁজ হওয়ার ২০ ঘণ্টা পর সোমবার নেপালের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের মুস্তাং জেলার থাসাং-এর সানো সোয়ার বিহারের কাছে ১৪ হাজার ৫০০ ফুট গভীরে এর ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়। আছড়ে পড়ার পর বিমানের ধ্বংসাবশেষ ১০০ মিটার ব্যাসার্ধে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে উদ্ধারকারী দলের জন্য উদ্ধার কাজ চালানো কঠিন হয়ে যায়। এছাড়া ধ্বংসাবশেষের স্থানে একসাথে একটির বেশি হেলিকপ্টার নামানো সম্ভব ছিল না।
নেপালি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নারায়ণ সিলওয়াল সোমবার সকালে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিমানটির ধ্বংসাবশেষের ছবি শেয়ার করেছেন।
এর আগে নেপালের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র নারায়ণ সিলওয়ালের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএনআই জানিয়েছিল, তারা এয়ারের বিমানটি লামচে নদীর মুখে বিধ্বস্ত হয়। নেপাল সেনাবাহিনী স্থল ও আকাশপথে ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে। তারা এয়ারের মুখপাত্র সুদর্শন বারতৌলা সংবাদ মাধ্যমকে বলেছে, উদ্ধারকারী দল ১৪টি মৃতদেহ উদ্ধার করেছে।
কাঠমান্ডু থেকে ২০০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে পর্যটন শহর পোখারা থেকে তারা এয়ার নাইন এনএইটি জোড়া ইঞ্জিনের বিমানটি জমসনের দিকে যাচ্ছিল। রাজধানী থেকে জমসন ৮০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে।
তারা এয়ারলাইন্সের একজন মুখপাত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি জানায়, বিমানটি পোখারা থেকে সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে উড্ডয়ন করে। এর ১৫ মিনিট পর কন্ট্রোল টাওয়ারের সঙ্গে বিমানের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বিধ্বস্ত বিমানটি পরে কোওয়াং গ্রামে পাওয়া গেছে।রোববার সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে নেপালের পশ্চিম পাহাড়ি অঞ্চলের জমসন বিমানবন্দরে বিমানটির অবতরণের কথা ছিল।
নেপালের সবচেয়ে বড় অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট নেটওয়ার্কের জন্য বিখ্যাত তারা এয়ারলাইন। এটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, সুদূর বিচ্ছিন্ন অঞ্চলে তাদের মতো করে ঝুঁকি নিয়ে আর কোনো কোম্পানি ফ্লাইট পরিচালনা করে না। এমনটি দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে খাদ্যশস্য, ওষুধ, ত্রাণসামগ্রী ও উদ্ধার অভিযান পরিচালনার দাবিও করেছে তারা।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় পর্বতশৃঙ্গের দেশ নেপালের বিস্তৃত অভ্যন্তরীণ বিমান নেটওয়ার্কে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। ঝঞ্ঝাপূর্ণ আবহাওয়া ও বিপজ্জনক পাহাড়ি অঞ্চলে ফ্লাইট পরিচালনার কারণে হরহামেশাই দেশটি থেকে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার খবর আসে। এর আগে ২০১৬ সালে পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলা মিগদিতে তারা এয়ারলাইনের বিমান দুর্ঘটনায় ২৩ যাত্রী নিহত হন।