বিটিআরসিকে ফাঁকি দিয়ে ওয়াকিটকি বিক্রি, কিনছে অপরাধীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ০৪:৫৫ পিএম, ২৩ মে ২০২২ সোমবার

ওয়াকিটকি ব্যবহারকারীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ওয়াকিটকি সেট ব্যবহার করে অপরাধীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে ডাকাতি, ছিনতাই, অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করছে।
এছাড়া অবৈধভাবে বিক্রির মাধ্যমে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল। এসব অভিযোগে চক্রের মূলহোতাসহ দুজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
রোববার (২২ মে) রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও গুলিস্তান স্টেডিয়াম মার্কেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন- অলেফিল ট্রেড করপোরেশন নামক প্রতিষ্ঠানের মালিক ও চক্রের মূলহোতা মো. আব্দুল্লাহ আল সাব্বির (৩৩) ও সহযোগী মো. আল মামুন (২৭)।
এসময় ১৬৮টি ওয়াকিটকি সেট, ব্যাটারি ৩৫টি, চার্জার ৩২টি, এন্টেনা ৬৩টি, মাউথ স্পিকার ছয়টি ও ব্যাক ক্লিপ ছয়টি জব্দ করা হয়।
সোমবার (২৩ মে) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৩ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, র্যাব-৩ ও বিটিআরসির যৌথ অভিযানে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে অবৈধ ওয়াকিটকি সেট বিক্রয়কারী চক্রের মূলহোতাসহ দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গোয়েন্দা সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দেশের বেশি মুনাফা লাভের আশায় অবৈধভাবে অপরাধীদের কাছে কালো রঙের ওয়াকিটকি সেট দীর্ঘদিন ধরে বিক্রি করে আসছে একটি চক্র। কিন্তু বিটিআরসির নির্দেশনা অনুযায়ী সরকারি প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি কালো রঙের ওয়াকিটকি সেট ব্যবহার করা দণ্ডনীয় অপরাধ।
গ্রেফতাররা তাদের অলেফিল ট্রেড করপোরেশন নামক প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বেতার যন্ত্র ওয়াকিটকি সেট মজুত করে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করে আসছিল। কিন্তু তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা এসব ওয়াকিটকি সেট ব্যবহার সংক্রান্ত লাইসেন্স ও কোনো ধরনের বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। এসব ওয়াকিটকি সেটের ফ্রিকোয়েন্সি ২৪৫-২৪৬ মেগাহার্জ। এছাড়া বহুতল ভবনের মধ্যে ওপর তলা থেকে নিচতলায় যোগাযোগ করা সম্ভব। এসব ওয়াকিটকির মূল্য পাঁচ হাজার থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা পর্যন্ত।
র্যাব-৩ এর অধিনায়ক আরও বলেন, আসামি আল সাব্বির ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক। তিনি দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে অবৈধভাবে ওয়াকিটকি সামগ্রী মজুত রেখে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করতেন। আল মামুন দু’বছর ধরে সাব্বিরের সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন। এ পর্যন্ত তারা দুই হাজার ওয়াকিটকি বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে অবৈধভাবে বিক্রি করেছেন।