বুধবার   ১৪ মে ২০২৫   বৈশাখ ৩১ ১৪৩২   ১৬ জ্বিলকদ ১৪৪৬

হাদিসের নির্দেশনা

ইসলামে অশুভ বলতে কিছু নেই

প্রকাশিত : ০৪:১৯ পিএম, ১৫ এপ্রিল ২০১৯ সোমবার

জাহেলি যুগের লোকেরা পাখি উড়িয়ে ভাগ্য নির্ণয় করত। সে যুগের লোকেরা কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজে যাওয়ার আগে নিজেদের পোষা পাখিকে উড়িয়ে দিত অথবা কোনো বন্য পাখিকে ঢিল ছুড়ত। পাখিটি ডান দিকে উড়ে গেলে কাজটি শুভ বলে ধারণা করত। কিন্তু পাখিটি বাঁ দিকে উড়ে গেলে অশুভ লক্ষণ ভাবত। ফলে তারা সেই কাজ থেকে বিরত থাকত।

এভাবে পাখি উড়িয়ে ভাগ্য নির্ধারণের কোনো ভিত্তি ইসলামে নেই। রাসুলুল্লাহ (সা.) এ ধরনের কাজকে শিরক আখ্যা দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘ভাগ্যের ভালো-মন্দ নির্ণয়ের জন্য পাখি ওড়ানো বা ঢিল ছোড়া বা কোনো কিছুকে অশুভ লক্ষণ মান্য করা শিরক।’ (আবু দাউদ : ৩৯০৯)

তিনি আরো বলেন, ‘অশুভ লক্ষণ গ্রহণ করা শিরকি কাজ।’ এ বাক্যটি তিনি তিনবার উচ্চারণ করেছেন। আর আমাদের মধ্যে কেউ নেই, যার মনে অশুভ লক্ষণের ধারণার উদ্রেক না হয়। কিন্তু আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসা করলে তিনি তা দূরীভূত করে দেন।’ (আবু দাউদ : ৩৯১২)

জাহেলি যুগের লোকেরা প্যাঁচাকে অশুভ মনে করত। আমাদের এ অঞ্চলেও এই ধারণা এখনো আছে। ‘বরবাদে গুলিস্তাঁ কে লিয়ে একহি উল্লুু কাফি হ্যায়’—এখনো অনেকেই ভাবেন। অথচ প্যাঁচা শুধুই আল্লাহর একটি সৃষ্টি মাত্র। বান্দার ভালো-খারাপ করার কোনো ক্ষমতা তার নেই। তাই প্যাঁচাকে কুলক্ষণের প্রতীক মনে করা যাবে না। এই মর্মে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘রোগে সংক্রমিত হওয়া বলতে কিছুই নেই, কোনো কিছুতে অশুভ নেই। প্যাঁচার মধ্যে কুলক্ষণ নেই এবং সফর মাসেও কোনো অশুভ নেই। তবে কুষ্ঠরোগী থেকে পলায়ন করো। যেমন—তুমি বাঘ থেকে পলায়ন করে থাকো।’ (বুখারি : ৫৭৬৯) অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘ছোঁয়াচে রোগ বলতে কিছুই নেই। প্যাঁচার মধ্যে কুলক্ষণের কিছুই নেই। তারকার দরুন বৃষ্টি হওয়া ভিত্তিহীন এবং সফর মাসে অশুভ নেই।’ (মুসলিম, হাদিস : ৫৯২৬)

তাই মঙ্গল ও অমঙ্গলের জন্য কুসংস্কারের পথ অবলম্বন না করে, মহান আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া উচিত। ভালো-খারাপ সবই একমাত্র মহান আল্লাহর হাতে।