চীনের সবজি ‘চয় সাম’ চাষে সফলতা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ০২:১৯ পিএম, ৭ এপ্রিল ২০২২ বৃহস্পতিবার

বাংলাদেশের আবহাওয়ায় চয় সাম চাষযোগ্য কি না তা নিয়ে গবেষণা করেছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রহিম। সবজিটি চাষ করে সফলতা পেয়েছেন তিনি।
চীন থেকে উদ্ভূত চয়সাম সবজির ইংরেজি নাম ‘ফ্লাওয়ারিং চাইনিজ ক্যাবেজ’। এটি ব্রাসিকেসি পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। জায়গা ভেদে এ সবজি চীনা বাঁধাকপি নামেও পরিচিত। পুরো উদ্ভিদটি সরল শাখাযুক্ত। ফুলের কুঁড়িসহ সবুজ পাতা এবং কচি ডালপালাসহ পুরো অংশই সবজি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
ড. মো. আব্দুর রহিম বলেন, চয় সাম বা চীনা বাঁধাকপি স্বাস্থ্য উন্নয়নকারী বিভিন্ন সালফার যৌগ এবং বায়োঅ্যাকটিভ সেকেন্ডারি মেটাবোলাইটে সমৃদ্ধ। যার মধ্যে রয়েছে অ্যামিনো অ্যাসিড, গুরুত্বপূর্ণ খনিজ, গ্লুকোসিনোলেটস, ফেনোলিক্স, ক্যারোটিনয়েডস, ফ্ল্যাভোনয়েডস, এবং ভিটামিন বি ৯, ই ও কে ১। এছাড়া এটি ফলিক এসিড ও ক্যারোটিনয়েডের সবচেয়ে সমৃদ্ধ উৎস। এ ফাইটোক্যামিক্যালগুলো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ এবং ক্যানসার, হৃদরোগ ও বার্ধক্যজনিত রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষামূলক শক্তিশালী প্রভাব রয়েছে। স্তন ক্যানসার ও প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এই সবজি।
চয় সাম চাষের পদ্ধতি নিয়ে তিনি বলেন, ১৫-২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সবজিটির উচ্চ ফলন হয় এবং স্বাদ বাড়ে। যা সাধারণত বাংলাদেশের শীতকালের একটি স্বাভাবিক গড় তাপমাত্রা। চয় সামের ফুলের কুঁড়িসহ সবুজ পাতা এবং কচি ডালপালা প্রধানত রান্না করা সবজি হিসেবে ব্যবহৃত হয়৷ পরিবেশ ও অবস্থানভেদে গাছটি ৪-১৬ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়৷ পুরো উদ্ভিদটি সরল শাখাযুক্ত এবং এই উদ্ভিদের পাতা ও নরমকাণ্ডসহ পুরো অংশই খাওয়া যায়। বপন থেকে শুরু সবজি কাটা পর্যন্ত ৩৫-৪০ দিন সময় লাগে।
বাংলাদেশে চয় সামের উৎপাদন সম্ভাব্যতা ও বাজার সম্ভাবনা সম্পর্কে ড. আব্দুর রহিম বলেন, দেশের কৃষি জলবায়ু এ সবজির চাষাবাদ ও বীজ উৎপাদনে উপযোগী। তাই এর ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। প্রচলিত বাঁধাকপির ফলন পেতে যেখানে ৬৫-৭০ দিন সময় লাগে সেখানে প্রায় তার অর্ধেক সময়ে এটির ফসল সংগ্রহ সম্ভব। আর এটির ভেষজ গুণাবলী অনেক বেশি। আবার এ উদ্ভিদের বীজ থেকে তেল উৎপাদনও সম্ভব যা যথেষ্ট ভেষজ গুণসম্পন্ন। তবে তেল উৎপাদন প্রক্রিয়া ও প্রক্রিয়াজাতকরণের সার্বিক বিষয়াদি নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন। আমরা এটি নিয়ে কাজ করছি৷