জয়পুরহাটে কিডনি কেনাবেচা চক্রের মুলহোতা সহ ৯ জন গ্রেপ্তার
জয়পুরহাট প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ০৩:৫৭ পিএম, ১২ জানুয়ারি ২০২২ বুধবার

গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় জয়পুরহাট র্যাব ক্যাম্পে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান র্যাব-৫ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল মোঃ জিয়াউর রহমান তালুকদার।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, কালাই উপজেলার উলিপুর গ্রামের মৃত আবু সাইদ আকন্দের ছেলে খাজা ময়েনউদ্দিন (৪৪), আবুজার রহমানের ছেলে আজাদুল ইসলাম (৩৭), বহুতি গ্রামের বোরহান উদ্দিনের ছেলে আব্দুল করিম ফোরকান আলী (৪৫), পাইকপাড়ার মৃত কছিম উদ্দিনের ছেলে আফসার মন্ডল (৫৬), মৃত আছির উদ্দিন মন্ডলের ছেলে নুরুল ইসলাম (৫০), পূর্ব কিষ্টপুর গ্রামের মৃত আবু বক্কর ফকিরের ছেলে বাবলু ফকির (৫২), দুধাইল নয়াপাড়ার আব্বাস আলী মন্ডলের দুই ছেলে সোবহান মন্ডল (৫২), মজাহিদুল মন্ডল(৪০), ও একই গ্রামে মৃত মোখলেছার রহমানের ছেলে সাজেদুল ফকির (৩৭)।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৫ এর অধিনায়ক জিয়াউর রহমান তালুকদার জানান, এই সংঘবদ্ধ কিডনি চক্রটি বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে গরিব, দরিদ্র ও আর্থিক অনটনে জর্জরিত মানুষদের টার্গেট করে বড় অংকের অর্থের প্রলোভন দেখায়। প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকা ও ভারতে নিয়ে তাদের দেহ থেকে কিডনি সংগ্রহ করে। সংগ্রহকৃত কিডনি গুলোর গ্রাহক প্রধানত দেশের ধনী পরিবার ও পার্শ্ববর্তী দেশগুলো। ঢাকা থেকে নিয়ন্ত্রিত চক্রটি বিভিন্ন ধাপে ভিকটিমদের কিডনি গ্রাহক শ্রেণীর কাছে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সরবরাহ করে থাকে। ভিকটিমরা শুধুমাত্র মোটা অঙ্কের টাকার লোভেই উক্ত কাজে প্ররোচিত হয়। কিন্তু পরে কিডনি নিয়ে চক্রটি চুক্তি মোতাবেক পাওনা পরিশোধ করে না।
পরবর্তীতে ভিকটিমরা টাকা চাইলে তাদের প্রাণনাশের হুমকি সহ আইনের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে। এমন বিভিন্ন অভিযোগে গতরাতে জয়পুরহাট র্যাব ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল কালাই উপজেলার বহুতি, বৈরাগীহাট, মোসলেমগঞ্জ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। এসময় কিডনি চক্রের সাথে জড়িত মুল হোতাসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। র্যাব অধিনায়ক আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের নামে পূর্বেরও মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন মোতাবেক এক বা একাধিক মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সাল থেকে ৭-৮ বছর পর্যন্ত অভাবে পরে কালাই উপজেলার কয়েকটি গ্রামের প্রায় ৫শ মানুষ তাদের কিডনি বিক্রি করেছে। সেসময় বেশ কয়েকজন দালালকে আটকও করেছিল পুলিশ। গত ২/৩ বছর এটি বন্ধ থাকলেও আবারও সংক্রিয় হয়ে উঠেছে এ চক্রটি। এই চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেপ্তার করলো র্যাব।