রোববার   ০৪ মে ২০২৫   বৈশাখ ২০ ১৪৩২   ০৬ জ্বিলকদ ১৪৪৬

একের পর এক সিদ্ধান্তে সমালোচিত গুচ্ছ পরীক্ষা 

নিজস্ব প্রতিবেদক    

প্রকাশিত : ০৩:২০ পিএম, ১৩ নভেম্বর ২০২১ শনিবার

গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষার কমিটি শুরুতে জানিয়েছে    সমন্বিত ২০ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হলে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত সুবিধা, অর্থনৈতিক সুবিধা,  কেন্দ্রে ভোগান্তির হয়রানি, টানা পরীক্ষার ভোগান্তি সহ যাবতীয় সকল ধরনের সুবিধা পাবে গুচ্ছ পদ্ধতিতে অংশগ্রহণ করা শিক্ষার্থীরা। 

২০ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার শুরুতে প্রাথমিক আবেদন এবং পরে চূড়ান্ত আবেদনে ১২০০ টাকা ফি নেওয়া নিয়ে আপত্তি জানায় শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ বিভাগীয় শহরের বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিতে চাইলেও পারেনি অধিকাংশ ক্ষেত্রে। কুমিল্লার শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে হয়েছে সিলেট গিয়ে অথবা চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে হয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে। 

গত ১৭ অক্টোবর বিজ্ঞান বিভাগের 'এ' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা মধ্য দিয়ে শুরু হয় সারাদেশে একযুগে সমন্বিত ২০ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা। পরবর্তী সময়ে ২৪ অক্টোবর ও সর্বশেষ ১লা সেপ্টেম্বর ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের পরীক্ষার মাধ্যমে শেষ হয়েছে গুচ্ছের প্রথমবারে মতো অনুষ্ঠিত পরীক্ষা। সবচেয়ে উদ্বিগ্নের বিষয় হচ্ছে সবগুলো পরীক্ষা সাপ্তাহের প্রথম কর্ম দিবস অর্থাৎ (রবিবারে) অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

শিক্ষার্থীরা বলেন, রবিবারে সাপ্তাহিক কর্মদিবসের জন্য আমাদের পোহাতে হয়েছে অসহনীয় যানজটের ভোগান্তি ও তীব্র গরম। এছাড়াও অনেক শিক্ষার্থী যানজটের জন্য সময়মতো পরীক্ষা কেন্দ্রে আসতে  পারেনি। যারফলে, শিক্ষার্থীদের ২০ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ একসাথে শেষ হয়ে যায়। 

এছাড়াও, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ভুল ফলাফলে জন্য শিক্ষার্থীদের মানসিক ভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার কমিটির নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফলাফল পুনঃনিরীক্ষণের জন্য একজন শিক্ষার্থীকে গুনতে হবে বাড়তি ২০০০ টাকা। গুচ্ছকেএকেবারে বাণিজ্যে পরিণত করেছে বলেছে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। 

গত ৯ নভেম্বর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। যাতে বলা হয়েছে,এসএসসির জিপিএতে ৪০% এবং এইচএসসির জিপিএতে ৬০% নম্বর বরাদ্দ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরবর্তী সময়ে সমালোচনার মুখে পড়ে পূর্বের সিদ্ধান্ত বাদ দিয়ে ১০% করে মোট ২০ নম্বর বরাদ্দের ঘোষণা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি ইউনিটে ভর্তির জন্য ৬০০ টাকা দিয়ে আবেদন করতে হবে একজন শিক্ষার্থীকে। সর্বমোট চারটি ইউনিটে শিক্ষার্থীকে আবেদন করতে দিতে হবে ২৪০০ টাকা সাথে সার্ভিস চার্জ। 

গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন সিদ্ধান্তে দেখা যায়, একজন শিক্ষার্থীকে ২০ টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি আবেদন করতে গুনতে হবে ১২০০০-১৪০০০ হাজার টাকা। যা একজন শিক্ষার্থীর জন্য বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে জানান শিক্ষার্থীরা।

 ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে গুচ্ছ পদ্ধতি বাতিলের জন্য নিয়মিত ভাবে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। শিক্ষার্থীরা বলেন, গুচ্ছ পদ্ধতির বিশ্ববিদ্যালয় সমূহ শুরুতে আমাদের আশার আলো দেখালেও ধীরে ধীরে তা সম্পন্নভাবে একের পর এক সিদ্ধান্তহীনতা ও ভর্তি প্রক্রিয়াকে বাণিজ্য রূপান্তর করেছে।