লাগামহীন বাজারে টিসিবিতে ভিড় আমজনতার
মাহির আমির মিলন, জবি প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ০৪:৪৯ পিএম, ১১ অক্টোবর ২০২১ সোমবার

প্রতি বছরের ন্যায় এবারে কোনো ব্যতিক্রম নেই বাজারে। সারাবছর যখনই বাজার পরিস্থিতি নিয়ে কথা উঠে তখনই কোনো বড় আয়োজন উপলক্ষে বাজার পরিস্থিতি কেমন থাকবে এই নিয়ে সবাই আতঙ্কিত থাকে। বাজারে সকল নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক হয়ে ওঠে গতানুগতিক ধারার।
দেশের কোনো একটি ধর্মীয় উৎসবের আগ মুহুর্তে আমাদের নিত্য - প্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজারটা অস্বাভাবিক হয়ে যায় এক প্রকার হুজুগে ব্যবসায়ীর অনৈতিকতার ফলে। যেখানে সারাবছর বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিকভাবে উঠানামা করে কিন্তু এই সময়টা আসলে সকল ধরনের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যগুলো মূল্য তালিকা সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে চলে আসে।
যদিও আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের জীবন - জীবিকা অতিবাহিত করতে এখনো অনেকটা হিমসিম খেতে হচ্ছে। গত বছরের মতো এবছরের শুরুতে করোনা ভাইরাস এই বাজার পরিস্থিতিকে আরো কঠিনতম অবস্থানে নিয়ে গিয়েছে। তবে, এরকম কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও সরকারের কিছু বাজার তদারকির মনিটরিং সেলগুলো খানিকটা হলেও জনসাধারণকে আশার আলো জ্বালিয়ে আবারো হারিয়ে যায় ব্যবসায়ীদের অগোচরে।
বরাবরের মতো বাজারে এমন উদ্যত সময়ে নিম্ন - মধ্যবিত্তের একমাত্র আস্থার ভরসা হচ্ছে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বিক্রয় করা নিত্যপণ্য সামগ্রী। বাজার পরিস্থিতি বিবেচনা করে টিসিবি সারাদেশে নিজস্ব ডিলারের মাধ্যমে গাড়িতে করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন পয়েন্টে এই সমস্ত পণ্য - সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম চালিয়ে যায়। যদিও সেখানে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সম্পৃক্ত থাকার ফলে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত এই টিসিবি পণ্যের মধ্যেও বহাল থাকে অসাধু ডিলারদের অনৈতিক মুনাফা।
ভালো মানের পণ্যগুলো আলাদা করে তাঁরা অতি নিম্ন মানের পণ্যগুলো বিক্রি করে এসব অভিযোগ নিত্যদিনের । তারপরও নিম্ন - মধ্যবিত্তদের জন্য স্বল্প মূল্যের বিতরণ করা এসব নিত্য-প্রয়োজনীয় দ্রব্যগুলো পরম সান্ত্বনার আশ্বাস দিচ্ছে বাজারের কঠিন পরিস্থিতিতে। সরকারের পাশাপাশি স্বায়িত্বশাসিত এসব প্রতিষ্ঠান গুলোর নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসাবে জনসাধারণে আস্থালাভ করার এখনি সুবর্ণ সুযোগ এসেছে মনে হয়।
পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্ক, লক্ষ্মীবাজার, রায়সাহেব বাজার, নারিন্দা, ওয়ারী, বাবুবাজারসহ আরো অনেক পয়েন্টে টিসিবি প্রতিনিয়ত তাদের বিতরণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। পুরান ঢাকার অধিকাংশ মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাঁরা অনেকটাই সরকারের এবং টিসিবির প্রতি কৃতজ্ঞ। সে সাথে তাঁরা ব'লে টিসিবি প্রতিদিন যে পরিমাণ পণ্য - সামগ্রী বিতরণ করে তা খুবই সামন্য, ফলে অধিকাংশ মানুষকে হতাশার চাপ নিয়ে খালি হাতে বাসায় ফিরতে হয়।
এসময় ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে লাইনে দাঁড়ানো জনাব ইয়াসিন বলেন, টিসিবিকে ধন্যবাদ আমাদেরকে অতি স্বল্প পরিসরে হলেও বাজারের মহামারির এসময়ে আমাদেরকে এই সেবা দেওয়ার জন্য। তাছাড়াও পরবর্তীতে যাতে তাঁদের এই কার্যক্রম চলমান থাকে তাহলে আমাদের সাধারণ মানুষের জন্য অনেক উপকার হবে। সে সাথে আমরা জোরদাবি জানাচ্ছি টিসিবি বিতরণ করা পণ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি করা হোক তাহলে কাউকে আর খালি হাতে ঘরে ফিরতে হবে না লাইনে দাঁড়িয়ে।
এসময় টিসিবি পণ্য বিতরণের দায়িত্বে থাকা সোহেল বলেন, আমাদের ডিলাররা যা দেয় আমরা প্রতিদিন তা বিতরণ করি। তবে অনেক সময় দেখা যায় এতো মানুষ এসে ভিড় করে আমরা হিমসিম খায় সকলকে পণ্য দিতে। অধিকাংশ সময়ে অনেকে পণ্য না পেয়ে আমাদের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে কিন্তু আমরা তখন অপারগতা প্রকাশ করি। আমাদের নিজেদের কাছেও ভালো লাগে এসব পরিস্থিতিতে মানুষের সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখতে পেরে।