বৃহস্পতিবার   ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫   ভাদ্র ২৬ ১৪৩২   ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

ভয়ে দেশ ছাড়লেন তালেবান নেতার ইন্টারভিউ নেয়া সেই নারী সাংবাদিক

তরুণ কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত : ০৫:২০ পিএম, ৩০ আগস্ট ২০২১ সোমবার

কিছুদিন আগেই ইতিহাস গড়েছিলেন বেহেশতা আরগান্দ। আফগানিস্তানের স্থানীয় টোলো নিউজের এই নারী সাংবাদিক তালেবানের সিনিয়র একজন প্রতিনিধির সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। এরপরই বিশ্বজুড়ে সংবাদের শিরোনাম হয়েছিলেন তিনি। খবর সিএনএনের।

দুইদিন পর আবারও খবরের শিরোনাম হন বেহেশতা। এবার তিনি সাক্ষাৎকার নেন পাকিস্তানি অধিকারকর্মী মালালা ইউসুফজাইয়ের। তালেবানরা হামলা চালানোর পরও প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন তিনি। টোলো নিউজ বলছে, এই প্রথম কোনও আফগান টিভিতে ইন্টারভিউ দিয়েছেন মালালা।

অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছিল, দূরন্ত গতিতে ছুটছিলেন তিনি। কিন্তু কাজ হঠাৎ থেমে যায়। তিনি আফগানিস্তান ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন। আরও অনেক আফগান সাংবাদিক এবং সাধারণ মানুষের মতো তিনিও ভয় থেকেই এই সিদ্ধান্ত নেন। নিজের দেশ ছাড়া নিয়ে সিএনএন বিজনেসের সঙ্গে হোয়াইটঅ্যাপের মাধ্যমে কথা বলেছেন। ভাগাভাগি করেছেন নিজের গত দুই সপ্তাহের অভিজ্ঞতা।

বেহেশতা বলেন, আমি দেশ ছেড়েছি কারণ লাখ লাখ মানুষের মতো আমিও তালেবানদের ভয় পাই। টোলো নিউজের মালিক সাদ মোহসেনি বলেন, বেহেশতার ঘটনা আফগানিস্তানের বর্তমান অবস্থার প্রতীকী চিত্র। তিনি বলেন, আমাদের প্রায় সব সুপরিচিত রিপোর্টার এবং সাংবাদিক দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। আমরা তাদের বিকল্প খুঁজতে পাগলের মতো কাজ করছি।

তিনি বলেন, আমরা জোড়া সমস্যার মুখোমুখি হয়েছি। অনেকেই দেশ ছাড়তে চাইছে (কারণ তারা অনিরাপদ অনুভব করছে) এবং একইসঙ্গে কাজ চালিয়ে যাওয়া। ২৪ বছর বয়সী বেহেশতা বলেন, আমি নবম শ্রেণিতে থাকতেই সাংবাদিক হওয়ার সিদ্ধান্ত নেই।

সেই ভাবনা থেকে কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে চার বছর সাংবাদিকতা নিয়ে পড়াশোনা করেন বেহেশতা। অল্প সময়ের মধ্যে কয়েকটি সংবাদ সংস্থা এবং রেডিও স্টেশনে কাজ করার পর চলতি বছরের শুরুতে টোলো নিউজে প্রেজেন্টার হিসেবে যোগ দেন তিনি। তিনি বলেন, আমি তাদের হয়ে এক মাস ২০ দিন কাজ করেছি। এরপরই ক্ষমতায় আসে তালেবান।

মোহসেনি বলেন, ১৭ আগস্ট প্রথমবারের মতো কোনও নারী প্রেজেন্টারের বিপরীতে বসে লাইভ টিভিতে ইন্টারভিউ দেন একজন তালেবান প্রতিনিধি। ওয়াশিংটন পোস্টে লেখা নিজের কলামে মোহসেনি জোর দিয়ে বলেন, বিশ্বের সামনে নিজেদের একটি সহনশীল চেহারা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছিল তালেবান।

সেই অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বেহেশতা বলেন, ইন্টারভিউটা খুব কঠিন ছিল। কিন্তু আমি আফগান নারীদের জন্য এমনটা করেছি। আমি নিজেকে বলি, কাউকে না কাউকে শুরু করতে হবে। যদি আমরা ঘরে থাকি বা কাজে না যাই, তারা বলবে নারীরা কাজ করতে চায় না। কিন্তু আমি নিজেকে বলি, কাজ শুরু করো।

বেহেশতা বলেন, আমি তালেবান সদস্যকে বলি ‘আমরা আমাদের অধিকার চাই। আমরা কাজ করতে চাই। আমরা চাই, এই সমাজে থাকতে। এটি আমাদের অধিকার। মালালাকে ইন্টারভিউয়ের দুইদিন পর কাতার বিমান বাহিনীর একটি উদ্ধার ফ্লাইটে চড়ে বসেন তিনি।