কক্সবাজারে হোটেল না পেয়ে রাস্তায় ও বাসে পর্যটকরা
তরুণ কণ্ঠ রিপোর্ট
প্রকাশিত : ০১:৪৬ পিএম, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ রোববার
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসসহ সপ্তাহ শেষে টানা তিন দিনের ছুটিতে বিপুল পরিমাণ পর্যটকের সমাগম হয়েছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে। এ কারণে হোটেলে রুম না পেয়ে সৈকতের বালিয়াড়ি ও বাসে রাত্রি যাপন করছে পর্যটকরা। দীর্ঘকালীন সময় ধরে কভিড-১৯ এর কারণে ঘরবন্দি মানুষ করোনা ভীতি কাটিয়ে শীত মৌসুমের শেষ দিকে টানা ছুটি পেয়ে ভিড় জমিয়েছে সৈকতে। স্থানীয়দের ধারণা কমপক্ষে তিন লক্ষাধিক পর্যটক এক দিনে এসে ভিড় করছে কক্সবাজারে। আগামী দুই দিনে এ সংখ্যা দ্বিগুণে দাঁড়াবে বলে মনে করছে পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে হোটেলে রুম ভাড়া না পেয়ে ব্যাগ ও লাগেজ নিয়ে অবস্থান করছেন বালিয়াড়িতে। আবার অনেক পর্যটক অবস্থান করছেন সাগরতীরে। ভ্রমণে এসে অনেক পর্যটক হোটেল রুমের জন্য ঘুরছেন। কেউ চাচ্ছেন অতিরিক্ত ভাড়া। পর্যটকদের অভিযোগ, তারা হয়রানি শিকার হচ্ছেন। পর্যটকরা জানান, অনেক দৌড়াদৌড়ি করলাম। কোনো রুম পাইনি। যেগুলো পাওয়া সেগুলোর অনেক ভাড়া। একজন জানান, গাড়ি ভাড়া, খাবারসহ সব কিছুতে অতিরিক্ত অর্থ নিচ্ছেন তারা। এতে পরিবার ও শিশু নিয়ে ভোগান্তি পড়েছি। পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানান, টানা ছুটিতে করোনার ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া ও হয়রানির করেছ দালালচক্র।
পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, করোনার পর থেকেই দেশের নানা প্রান্ত থেকে কোনো শিক্ষা ট্যুরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর ভিড় হয়নি। কক্সবাজারে আসেনি এবার কোনো কর্পোরেট পিকনিক দল। দেশে করোনার সংক্রমণ হ্রাস পাওয়ায় মানুষের মধ্যে করোনা ভীতি কেটেছে। সেই সঙ্গে ভ্যাকসিন আসার পর সাহস বেড়েছে করোনা ভীতিতে কাতর লোকজনের মধ্যে। এসব কারণে মৌসুমের শেষ দিকের তিন দিনের ছুটিতে এভাবে লোকজন বেড়াতে ছুটে চলা।কক্সবাজারে এত বিপুলসংখ্যক পর্যটক এসে ভিড় জমিয়েছেন যে, ছোট্ট শহরটির সাড়ে চার শতাধিক হোটেল-মোটেল ও কটেজে তিল ধারণেরও জায়গা নেই। স্থানীয়রা বলছেন, গত কয়েক বছরের মধ্যে রেকর্ডসংখ্যক পর্যটকের সমাগম ঘটেছে কক্সবাজারে। কক্সবাজারে আসা-যাওয়ার যানবাহন ও বিমানেও গত সপ্তাহ থেকে শুরু করে আগামী এক সপ্তাহ পর্যন্ত কোনো টিকেটই মিলছে না।
এদিকে কক্সবাজার সৈকত ছেড়ে ভ্রমণকারীরা পর্যটক জাহাজে চড়ে ছুটছেন প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনস। কক্সবাজার থেকে একটি এবং টেকনাফ থেকে আরো ৭টি পর্যটক জাহাজসহ সবগুলো জাহাজ ও ইঞ্জিনচালিত নৌকা এবং স্পিড বোটে করে এক দিনে কমপক্ষে ১০ হাজার পর্যটক দ্বীপে ভ্রমণে গেছেন। ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক জানান, সৈকতে তিল ধারণের জায়গাও নেই। এত বিপুলসংখ্যক ভ্রমণকারী গত পাঁচ বছরের সময়েও এক সঙ্গে ভিড় জমাননি। কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বলেন- শুক্রবার এক দিনেই কমপক্ষে তিন লক্ষাধিক পর্যটকের সমাগম ঘটেছে কক্সবাজারে। কক্সবাজারের সাড়ে চার শতাধিক হোটেলে দুই লক্ষাধিক অতিথি থাকতে পারেন। বাদবাকিদের একটু কষ্ট করে রাত অতিবাহিত করতে হবে।
